সফিউল আলম ওরফে সমারুর বয়স ৪৫ বছর। পরিবারের ওপর অভিমান করে ৩০ বছর আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর তিনি ১৮ বছরের ছেলেকে নিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি বাড়িতে ফেরেন। এ নিয়ে তাঁর পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয়দের মাঝে আনন্দের জোয়ার বইছে। সফিউল আলমের বাড়ি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভুট্টোজোত পাঠানপাড়া এলাকায়। তিনি ওই এলাকার আকবর আলীর দ্বিতীয় ছেলে।
না গেছে, ১৯৯২ সালে বড় ভাই ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে ঝগড়া ও কথা-কাটাকাটি হয় সফিউলের। এতে ভাইয়ের সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। পরে বাসে উঠে চলে যান ঠাকুরগাঁও, এরপর দিনাজপুর, চট্টগ্রাম ও পরবর্তীতে কক্সবাজারের চকোরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের হাজিয়ান এলাকায় যান। সেখানে এক চেয়ারম্যানের বাড়িতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। এদিকে তাঁর পরিবার বিভিন্ন জেলায় খোঁজাখুঁজি করেও যখন তাঁর সন্ধান পায়নি তখন সফিউল বেঁচে নেই এমন ধারণাই ছিল পরিবারের সদস্যদের। এ ছাড়া ছেলে হারানো শোকে মারাও যান সফিউলের মা সপিলা বেগম।
সফিউল খেতমজুরের কাজ করে ১০ শতক জমি কিনে বাড়ি করেছেন। স্ত্রী সাকিলা বেগমসহ তাঁদের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। এদিকে সফিউলের বড় ছেলে ১৮ বছরের তাওহিদুল ইসলাম বাবাকে নিয়ে পৈতৃক ঠিকানা খোঁজার জন্য বের হন। প্রথমেই আসেন পঞ্চগড়ে, সেখান থেকে দশমাইল নামক এক বাজারে গেলে সেই বাজারের কথা তাঁর মনে পড়ে, এরপর স্থানীয়দের মাধ্যমে তাঁর বড় ভাই সফিউল ও তাঁর ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে যান।
সফিউলের বড় ভাই ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমার মেজো ভাই আমার ওপর অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি।’সফিউল বলেন, ‘আমি বড় ভাইয়ের ওপর অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই। কিন্তু আমার কিছু মনে পড়তে ছিল না। অনেক চেষ্টা করেছি বাড়িতে আসার, ঠিকানা বলতে না পারায় আসতে পারিনি।’