হোম > ছাপা সংস্করণ

খেলেই মেলে উপহার

তাজরুল ইসলাম, পীরগাছা (রংপুর) 

ধরুন, আপনি দেড় কেজি চালের ভাত খেলেন। সে জন্য খাওয়া শেষে আপনাকে দেওয়া হলো এক গ্লাস দুধ, এক গ্লাস দই, একটি কোমলপানীয়। আবার ধরুন, আপনি তিন বাটি ভাত খেয়েছেন। তার জন্য আপনাকে দেওয়া হলো যাতায়াত এবং নাশতা বাবদ ১০২ টাকা বকশিশ!

ধারণার বাইরের বিষয়, তাই তো? কিন্তু এভাবেই খাবার বিক্রি করে আসছেন ‘চাচার হোটেলে’র মালিক মকবুল হোসেন।

অনেক গল্প শুনে সম্প্রতি উপস্থিত হই চাচার হোটেলে। টিনশেডের ছোট্ট একটি ঘর। ভেতরে মানুষের কোলাহল। সবাই খাবার খেতে ব্যস্ত। মাত্র ১৬০ টাকায় বাটিভর্তি ভাত-মুগ ডাল আর সঙ্গে ৩ পিস গরুর মাংস, অর্ধেক ডিম, আলু ও শিমভাজা, মাছ, শুঁটকি, বাদাম ও আলুভর্তা, লালশাক ভাজা ও সালাদ!

একসময় পথের ধারে আটার রুটি বিক্রি করতেন মকবুল হোসেন। রুটির সঙ্গে নানা পদের ভর্তা আর চিনি দিতেন তিনি। ২০১১ সাল পর্যন্ত রুটি বিক্রির পর শুরু করেন হোটেলের ব্যবসা। 
অল্প সময়ে ‘চাচার হোটেল’ নামে পরিচিতি পায় মকবুল হোসেনের খাবারের দোকান। খাবারে ভিন্নতা আনতে তিনি ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের খাবার তৈরি করতে শুরু করেন। শুরু থেকেই হোটেলটিতে পেটচুক্তি হিসেবে খাবারের ব্যবস্থা ছিল। মকবুল হোসেনের হোটেলে এখন পাওয়া যায় ১০ রকমের ভর্তা, গরুর মাংস, মুগ ডালসহ চিকন চালের ভাত। ৫০ টাকায় শুরু করে এখন ১৬০ টাকায় পেটচুক্তি খাবার মকবুল হোসেনকে এনে দিয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। রংপুর-সুন্দরগঞ্জ মহাসড়কের পীরগাছা উপজেলার বকসীর দিঘি বাজারে রাস্তার ধারেই মকবুল হোসেনের চাচার হোটেল।

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপাড়া গ্রামের মৃত হেলাল শেখের ছেলে মকবুল হোসেন। নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও খুব একটা বাড়েনি তাঁর খাবারের দাম। ৫০ টাকা থেকে শুরু করে প্রতিবছর ১০ টাকা করে বাড়িয়ে এখন ১৬০ টাকায় খাবার বিক্রি করছেন তিনি। নিয়ম করে সপ্তাহের ৫ দিন ভোররাত ৩টা ১০ মিনিটে দোকান খোলা হয়। বন্ধ হয় বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে। শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকে।

মকবুল হোসেন জানান, তাঁরা স্বামী-স্ত্রী মিলে হোটেলটি চালান। দিন দিন গ্রাহকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সাইফুল ইসলাম নামে একজন কর্মচারীকে রাখা হয়েছে। প্রতিদিন ৫০ কেজি চালের ভাত বিক্রি করেন মকবুল হোসেন। প্রতিদিন দেড় শ মানুষের রান্না হয় এই হোটেলে। এখানকার নিয়মিত গ্রাহক প্রায় ৫০ জন। অনেক যানবাহনের চালক ও শ্রমিক রাতে খাবার খান বলে রাত ৩টা ১০ মিনিটে হোটেল খোলা হয়।

এই হোটেলের নিয়মিত গ্রাহক লাবলু মিয়া, খোরশেদ আলম, শাহ শাহেদ ফারুক ও স্কুলশিক্ষক শামসুল আলমের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, নামীদামি হোটেলের চেয়ে পেটচুক্তি খাবারে অনেক সাশ্রয়। মাত্র ১৬০ টাকায় অনেক পদের খাবার পাওয়া যায়। রান্না ও স্বাদ অতুলনীয় বলে দিন দিন এই হোটেলের গ্রাহক বাড়ছে।

মকবুল হোসেনের স্ত্রী তহিরন নেছা বলেন, ‘আমরা স্বামী-স্ত্রী অনেক কষ্ট করেছি। আমাদের দুটি ছেলে কয়েক বছরের ব্যবধানে মারা গেছে। আর দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। একসময়ের কষ্ট আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছে। ভাড়ায় থাকা এই হোটেলটি আমাদের পথ দেখিয়েছে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ