কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলরসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কক্সবাজার আনন্দ ভ্রমণে যাওয়ায় তিন দিন ধরে তালাবদ্ধ কুয়াকাটা পৌরসভা। এতে পৌরসভা কার্যালয়ে নাগরিকসেবা নিতে আসা মানুষ পড়েছেন ভোগান্তিতে। মেয়র অনুসারী ঠিকাদারদের অর্থায়নে পৌর পরিষদের তিন দিনের এ আনন্দ ভ্রমণ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াসহ ক্ষোভ বিরাজ করছে কুয়াকাটা পৌরসভার নাগরিকদের মধ্যে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে কোনো ধরনের অনুমতি কিংবা ছুটি না নিয়ে শুধু পৌর পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে গত ৩০ নভেম্বর থেকে পৌরসভা কার্যালয় তালাবদ্ধ রেখে পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরেরা পৌরসভার স্টাফদের নিয়ে কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, হিমছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে যান। এ সফরে মেয়রের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, মেয়ে, দুই ছেলে, দুই নাতি, মেয়রের মালিকানাধীন হোটেলের ম্যানেজার, গাড়ির ড্রাইভারসহ পৌর নির্বাচনে অর্থায়ন করা কয়েকজন ঠিকাদার ও শুভাকাঙ্ক্ষী।
কুয়াকাটা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক মো. নুরজামাল (৩৭) বলেন, ‘ গত বুধবার পরিচয়পত্র নিতে এসে দেখি পৌরসভার প্রধান ফটকের বাইরে ও ভেতর থেকে তালাবদ্ধ। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নাই। সবাই ভ্রমণে গেছে।’
পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সুপারভাইজার মো. ইউসুফ বলেন, ‘কাউন্সিলর সাবের আকন, ফজলুল হক খান ও বড় ইঞ্জিনিয়ার স্যার ছাড়া পৌরসভার সবাই কক্সবাজার গেছে। তাই অফিস বন্ধ।’
কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা বলেন, ‘মেয়র এক দিনের জন্য কোথাও গেলে প্যানেল ১, ২ অথবা ৩-কে দায়িত্ব দিয়ে যেতে হয়। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হয়। এভাবে সব কাউন্সিলর, স্টাফ নিয়ে বিনোদন ভ্রমণে যাওয়া ইতিহাস-ব্রেক। শুধু একজন সুইপার আছে, যে গত তিন দিনে এক দিন ভোরে মাত্র একবার অফিসের তালা খুলেছিল। কিছুক্ষণ পর আবার তালা বন্ধ করে চলে যায়।’
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলররা অফিস বন্ধ রেখে এভাবে কুয়াকাটা যেতে পারেন না। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।’
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘আমার পরিষদ খোলা আছে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফজলুল হক খান ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাবের আকনকে দায়িত্ব দিয়ে এসেছি। ইঞ্জিনিয়ার সাহেব, সচিব সাহেব আছেন। এ ছাড়া ডিসি মহোদয় বরাবর লিখিত আবেদন করে এবং ফোনে মৌখিকভাবে অনুমতি নিয়ে আমরা ভ্রমণে এসেছি।’