গঙ্গাচড়ায় নিখোঁজের পাঁচ দিনের মাথায় এক নারীর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার সকালে উপজেলার বুড়িরহাট আঞ্চলিক কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের একটি পরিত্যক্ত ভবনে লাশটি পাওয়া যায়।
নারীর নাম রাহেলা বেগম (৩৫)। তিনি গঙ্গাচড়া সদরের নিলকচন্ডী আবাসন এলাকার মৃত মনজাব আলীর স্ত্রী। তিনি গত বুধবার তাঁর বন্ধু শহিদুল ইসলামকে নিয়ে ব্যাংক থেকে ডিপোজিট পেনশন স্কিমের (ডিপিএস) টাকা উত্তোলন করতে গিয়েছিলেন। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেননি। এ ঘটনায় শহিদুল পলাতক আছেন।
কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশিস কুমার সাহা জানান, পাহারাদার হারুন রোববার সকালে কাজে এসে ডিউটি পোস্টের পাশে একটি পরিত্যক্ত ভবনের দরজা খোলা অবস্থায় দেখতে পান। পরে তিনি কৌতূহলবশত ভেতরে উঁকি দেন এবং দেখেন লাশ পড়ে আছে। তিনি বিষয়টি তাঁকে জানালে তিনি গঙ্গাচড়া থানায় সংবাদ দেন। পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে। এ সময় এলাকাবাসী লাশটি রাহেলার বলে শনাক্ত করে। পরে সিআইডি ও পিবিআই সদস্যরা সুরতহাল তৈরি করে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এলাকাবাসী জানান, রাহেলা ১০ বছর ধরে স্বামী মনজাব ও একমাত্র সন্তান রায়হান বাবুকে নিয়ে নিলকচন্ডী আবাসনে বাস করতেন। তাঁর স্বামী পাঁচ বছর আগে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান। ১৫ বছরের রায়হান ঢাকায় একটি পলিথিনের কারখানায় চাকরি করে। রাহেলা স্থানীয় একটি পাটকলে চাকরি করতেন। তাঁর সঙ্গে প্রতিবেশী শহিদুল ইসলামের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। শহিদুল কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও ফার্ম শ্রমিক সংগঠনের সহসভাপতি।
রাহেলার ভাই মন্টু ও বাচ্চু মিয়া জানান, রংপুরের একটি ব্যাংকে রাহেলার ডিপিএস অ্যাকাউন্ট আছে। সেখানে তিনি প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা জমা রাখতেন। বাড়িতে গুরুত্বপূর্ণ কাগজ রাখা নিরাপদ মনে না করায় তিনি অ্যাকাউন্টের কাগজসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র শহিদুলের কাছে রেখেছিলেন। ডিপিএসের মেয়াদ শেষ হওয়ায় টাকা উত্তোলন করে তা দিয়ে রাহেলা জমি কিনতে চেয়েছিলেন। এ জন্য জমির দামও ঠিক হয়েছিল। তিনি টাকা আনতে বুধবার ব্যাংকে যান।
দুই ভাই আরও জানান, রাহেলা নিখোঁজ হওয়ার তাঁর সন্ধান জানতে শহিদুলের কাছে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই দিন থেকে তাঁকেও পাওয়া যাচ্ছে না। ভাইদের দাবি, রাহেলার টাকা আত্মসাৎ করে তাঁকে হত্যা করে শহিদুল পালিয়েছেন।
এ বিষয়ে রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’