ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা শহরের বিভিন্ন ভাঙারির দোকানে মিলছে করোনাভাইরাসের টিকায় ব্যবহৃত সিরিঞ্জ-ভায়েল। কার্টন ভর্তি সিরিঞ্জ আর ভায়েল এখন ভাঙারির দোকানে দোকানে ঘুরছে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা করোনা ভাইরাসের যে টিকা দেওয়া হয়েছে সেসব সিরিঞ্জ আর ভায়েল সহ অন্যান্য টিকার বস্তা বস্তা ভায়েল পুড়িয়ে না ফেলে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে ভাঙারির দোকানগুলো। দোকানিরা জানান, হাসপাতালের কর্মচারীরা এসব বিক্রি করছেন তাঁদের কাছে।
শৈলকুপার কবিরপুরে কবি গোলাম মোস্তফা সড়কে মা ক্রোকারিজ স্টোরে দেখা গেছে ৫ কার্টুনের বেশি করোনা ভাইরাসের ব্যবহৃত সিরিঞ্জ। আরও রয়েছে বিভিন্ন টিকার বস্তা বস্তা ভায়েল। এই দোকানটিতে রোববার দুপুরে হাসপাতালের কর্মচারীরা এসে কার্টুন আর বস্তা ভর্তি সিরিঞ্জ-ভায়েল বিক্রি করেছেন। ৪০ টাকা কেজি দরে সেগুলি দোকানিরা কিনেছেন।
ভাঙারির দোকানদার আবদুল মান্নান জানান, তাঁরা ভাঙারি হিসাবে কিনেছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান বিজন কুমারের দায়িত্ব করোনাভাইরাসের এসব টিকার সামগ্রী দেখভালের দায়িত্ব। রোগীদের টিকা দেওয়ার পর এই টেকনিশিয়ান এসব স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ সামগ্রী পুড়িয়ে না ফেলে ভাঙারির দোকানে বিক্রি করে দেন। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
জানা গেছে, সরকার এসব ব্যবহৃত সামগ্রী ধ্বংস বা পুড়িয়ে ফেলার জন্য তেল পর্যন্ত সরবরাহ করে থাকে অথচ সমস্ত নিয়ম আর বিধি ভঙ্গ করে তিনি এসব বিক্রি করে দিচ্ছেন।
গোপন অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে যেসব করোনা টিকার সামগ্রী দেওয়া হয়, সেসবের ব্যবহৃত সিরিঞ্জ আর ভায়েলও অরক্ষিত বা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
এই ব্যাপারে শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান বিজন কুমারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘কার্টুনসহ সিরিঞ্জ বাইরে যাওয়া বা বিক্রির কোনো নিয়ম নেই। আমার অধীনে থাকা সিরিঞ্জ-ভায়েল পুড়িয়ে ফেলেছি। কীভাবে এসব বিক্রি হচ্ছে তা আমি জানিনা।’
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডাক্তার কনক রহমান জানান, ‘বিষয়টির ব্যাপারে দ্রুত খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। এসব সরঞ্জাম কোনো অবস্থাতেই জনসাধারণের হাতে যাওয়া বা বাইরে বিক্রির নিয়ম নেই।’
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদ আল মামুন বিজন কুমারকে শোকজ করেছেন।