খেতে মাচায় রয়েছে পটোল, নিচে পেঁয়াজ, রসুন ও মুখিকচুর গাছ। নিজেদের খাওয়া এবং বিক্রির জন্য কিছু পেঁয়াজ ওঠানোও হয়েছে। বাকিগুলো দুই-তিন সপ্তাহ পর তোলা যাবে। পুরোদমে পটোল তোলার আগে কচুও তোলার মতো হয়ে যাবে।
বলছি, একটি সাথি ফসলের খেতের কথা। খেতটি ঝিকরগাছা উপজেলার বল্লা গ্রামের।
সাথি ফসলের খেত শুধু বল্লা না উপজেলার সব মাঠে এ মিশ্র চাষে কৃষকেরা ঝুঁকে পড়েছেন। দিন দিন মানুষ বাড়ছে, আর কমছে চাষের জমি। তাই কৃষকেরা সাথি ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এতে লাভবানও হচ্ছেন তাঁরা।
উপজেলার বারবাকপুর গ্রামের কৃষক হবিবর রহমান আধা বিঘা জমিতে পটোলের সঙ্গে পেঁয়াজের চাষ করে লাভবান হয়েছেন।
হবিবর রহমান বলেন, ‘১০ কাঠা জমিতে পটোলের খেতে সাথি ফসল হিসেবে পেঁয়াজ লাগিয়ে ৪০ মণ ফলন পেয়েছি, যা সে সময়ে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি।’
বল্লা গ্রামের কৃষক সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাথি ফসলের চাষে লাভবান হচ্ছি। একসঙ্গে হরেক রকম আবাদ করে ফলনও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে মাচায় যেসব ফসল আবাদ করা হয়, তার নিচে সাথি ফসল হিসেবে অন্য ফসলও চাষ করছি।’
বোধখানা গ্রামের কৃষক আলী হোসেন বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে পেঁপের সাথি ফসল হিসেবে হলুদ ও ক্ষীরা চাষ করেছি। সেগুলো থেকে ভালো লাভবান হয়েছি। ২০ হাজার টাকার হলুদ ও ১০ হাজার টাকার ক্ষীরা বিক্রি করেছি। খেতে এখনো ক্ষীরা রয়েছে।’
একই গ্রামের মহিউদ্দিন বলেন, ‘দুই বিঘা জমির পেঁপে খেতে কপি ও বেগুন চাষ করে ২০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি।’
বেনেয়ালী গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ বাবু বলেন, ‘সাথি ফসল হিসেবে পৌনে দুই বিঘা জমিতে পেঁপে খেতে গাঁদা ফুল রোপণ করে লাখ টাকা বিক্রি করেছি।’
উপজেলার বোধখানা ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘পেঁপে খেতে আলু, হলুদ, মরিচ, বাঁধাকপি, ফুলকপি এমনকি ফুলের চাষও করা হচ্ছে সাথি ফসল হিসেবে।’
আইয়ুব হোসেন আরও বলেন, ‘কৃষকেরা শুধু ‘‘এ’’ ব্লকে অন্তত ১০ হেক্টর জমিতে নাসিক রেড এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছেন সাথি ফসল হিসেবে। এ চাষে লাভবান হওয়ায় দিন দিন কৃষকেরা আগ্রহী হচ্ছেন।’