তারাগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন গত রোববার অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে একটি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর জয় হলেও বাকি চারটিতে বড় ব্যবধানে নৌকার প্রার্থীদের পরাজয় হয়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের অনেকে মনে করছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে যাঁরা ত্যাগী ও এলাকায় যাঁরা জনপ্রিয়, গ্রহণযোগ্য দল তাঁদের মনোনয়ন না দিয়ে কম জনপ্রিয় নেতাদের মনোনয়ন দেওয়ায় এ ভরাডুবি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ভুলে পাঁচটির মধ্যে দুটি ইউপিতে নৌকার জয় হয়। এবারের নির্বাচনেও প্রার্থী নির্বাচনের ভুলে মাত্র একটি ইউপিতে নৌকার জয় হয়েছে। তবে দুটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীর জয় হয়েছে। ইকরচালী ইউনিয়নে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস উদ্দিন। আলমপডুর ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন আরেক বিদ্রোহী রবিউল ইসলাম রাশেল।
শুধু কুর্শা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেন আফজালুল হক সরকার। তিনি গত নির্বাচনেও নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নে গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও এবার পরাজিত হয়েছেন হারুন অর রশিদ বাবুল। সয়ার ইউনিয়নে গত নির্বাচনে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন নৌকার প্রার্থী জালাল উদ্দিন। এবার তিনি নৌকার মনোনয়ন না পাওয়ায় নির্বাচন করেননি। কিন্তু তাঁর পরিবর্তে ভাতিজা গোলাম রব্বানী লাবু স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন। এ ইউনিয়নেও নৌকা হেরে যায়।
আলমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল ইসলাম রুবেল বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল সিদ্ধান্ত ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাবে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। বিদ্রোহীরাই জয়ী হয়েছেন।
জানতে চাইলে সয়ার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল জলিল গতকাল মঙ্গলবার মুঠোফোনে বলেন, তারাগঞ্জে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের উঠতি বয়সের নেতা-কর্মীদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকায় জনপ্রিয়তা আছে এমন ত্যাগী নেতারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। তাঁদের জয় হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জালাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, জনপ্রিয়তা নেই এমন নেতা-কর্মীকে মনোনয়ন দেওয়ায় নৌকার ভরাডুবি হয়েছে।