কর্ম মানুষকে ক্ষণজন্মা করে। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া ইতিহাস-ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫ তম জন্মদিনের এই মাহেন্দ্রক্ষণে তাঁর জন্য রইল নিরন্তর শুভ কামনা। বহুমাত্রিক কর্মযজ্ঞের প্রাণশক্তি শেখ হাসিনার জন্মদিনের শুভক্ষণে তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম গ্রহণের সুবাদে শৈশব থেকেই সংগ্রামী চেতনার সুমহান উত্তরাধিকার বহন করছেন। পিতার সংগ্রামী জীবনের আত্মত্যাগ কাছ থেকে দেখেছেন, শিখেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে মহান স্বাধীনতার স্থপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কান্ডারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছিল, তখন তিনি দলের হাল ধরেন। তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ যেমন সুসংগঠিত তেমনি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত। এ সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ, যোগ্য ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এখন অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।
১৯৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ক্রমাগত উন্নতি ও সমৃদ্ধি ঘটতে শুরু করে। ফের বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সাল হতে দেশের অর্থনীতি-রাজনীতি পেয়েছে নতুন গতি। বাংলাদেশের অর্জনগুলো আজ দৃশ্যমান এবং সর্বজন স্বীকৃত। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা মেট্রোরেলের মতো মেগা প্রকল্পের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনেক আত্মত্যাগ আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনাকে এগিয়ে যেতে হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সালের দিকে তাকালে দেখব, বিস্ময়কর উত্থান এই বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে ৫৭ তম দেশ হিসেবে আমরা স্যাটেলাইট ক্লাবের গর্বিত সদস্য হয়েছি। ‘নিউক্লিয়ার নেশন’ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব পরমাণু ক্লাবের গর্বিত সদস্য হয়েছে। আমাদের রিজার্ভ সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করে ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এসেছে অভূতপূর্ব অগ্রগতি। প্রাক-প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে অসাধারণ সাফল্য। প্রতিটি জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনার যে প্রক্রিয়া শেখ হাসিনা শুরু করেন তারই ধারাবাহিকতায় দেশে আজ ৫৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। সমগ্র বিশ্বের কাছে তিনি আজ উন্নয়ন নেতৃত্বের রোল মডেল হিসেবে সুপরিচিত। নিজেকে তিনি নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। ভূষিত হয়েছেন একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কারে। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ তিন অনুপ্রেরণাদায়ী নারী নেতার একজন শেখ হাসিনা। আমাদের সাফল্য অগণিত; এতসব সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবেই জাতিসংঘ বাংলাদেশকে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের পর্যায় উত্তরণের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সুদূরের যাত্রী। ছোট এ দেশের পাশে এখন পৃথিবীর বড় শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো থাকতে চায়। সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বিস্মিত জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন বলেন, ‘অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশের উচিত বাংলাদেশকে অনুসরণ করা।’ সুতরাং এ কথা বলা বাহুল্য যে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেতৃত্বে শেখ হাসিনা: অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।
বাংলাদেশের উন্নয়নের কান্ডারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিনে তাঁর দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনায় নিরন্তর প্রার্থনা।
লেখক: উপাচার্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।