ইট-পাথরের গগনচুম্বী অট্টালিকা ঢেকে দিয়েছে রাজধানী ঢাকার আকাশ। যেখানে সবুজের দেখা মেলে কিঞ্চিৎ। রুক্ষ এই নগরীতে ছাদে অথবা ব্যালকনিতে ছোটখাটো বাগান করে প্রশান্তি খোঁজেন বৃক্ষপ্রেমীরা। বৃক্ষপ্রেমী নগরবাসীর জন্য শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বাণিজ্য মেলার মাঠে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী জাতীয় বৃক্ষমেলা।
মেলায় ঢুকলেই হরেক রকমের গাছের দেখা মিলবে। গাছে গাছে ঝুলছে আম, জামরুল, কমলা, করমচা, আমলকী, আমড়াসহ নানা প্রজাতির ফল। টক-মিষ্টি এসব ফলের পাশে শোভা পাচ্ছে পাতাবাহার, রঙ্গন, শাপলা, বাগানবিলাসসহ হরেক রঙের গোলাপ। চোখ আটকে যাবে অর্কিড, বনসাই আর লাল-গোলাপি ক্যাকটাসে। ৫ জুন থেকে শুরু হওয়া এই মেলায় ১১০টি স্টলে প্রায় ২০০ প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফলদ, বনজ, ঔষধি ও শোভাবর্ধক গাছ পাওয়া যাচ্ছে। স্টলগুলোতে আরও রয়েছে গাছ পরিচর্যার নানা উপকরণ।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই ছিল বৃষ্টি। ফলে অন্য দিনের তুলনায় মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল কম। তবে মেলায় গাছের বিক্রি ছিল সন্তোষজনক। মহাখালী এলাকার মনিরুল ইসলাম মেয়ে সুমি ও স্ত্রী সাথীকে নিয়ে মেলায় এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকেই টিপটিপ বৃষ্টি ছিল। ভেবেছিলাম শনিবার আসব। কিন্তু মেয়ে বায়না ধরায় না এসে পারলাম না। মেলায় দেশি-বিদেশি অনেক জাতের গাছের চারা দেখলাম। ব্যালকনিতে লাগানোর জন্য ৫০০ টাকা করে কয়েকটা অর্কিড কিনেছি।’
‘দ্বীপ গার্ডেন নার্সারি’ এসেছে গৌরীপুর থেকে। এর বিক্রেতা আলাল হোসেন বলেন, ‘১৫০ প্রজাতির ওপরে গাছ এনেছি। আরও আসবে। গাছগুলোর দাম ৫০ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা।’
গার্ডেনিয়া নার্সারির বিক্রেতা শেখ বাবু বলেন, ‘ক্রেতাদের চাহিদার কথা চিন্তা করে আমরা মেলায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ এনেছি। গাছের দাম এখন কিছুটা কম। তাই বিক্রিও আগের চেয়ে একটু বেশি।’ তবে বিক্রি আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা নার্সারিমালিকদের।
মেলার তথ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ঢাকা সামাজিক বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবু তারেক খন্দকার বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি ছিল বলে অন্য দিনের তুলনায় ভিড় একটু কম। তাদের তথ্যমতে, ১৫ জুন পর্যন্ত প্রথম ১১ দিনে ৬ লাখ ৪৭ হাজার ২৯৬টি চারা বিক্রি হয়েছে।
উল্লেখ্য, বন অধিদপ্তরের আয়োজনে ‘বৃক্ষপ্রাণে প্রকৃতি-প্রতিবেশ, আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদেশ’ স্লোগানে শুরু হওয়া ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২২’ চলবে আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিনা মূল্যে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করা যাবে।