হোম > পরিবেশ

সমুদ্র ভালো থাক যৌথতায়

সজল জাহিদ

এক পত্রিকার সাংবাদিক বন্ধু ফোন করে জানালেন, আন্তর্জাতিক মহাসাগর দিবসের লেখা দিতে হবে। এবার পড়লাম ভাবনায়। খুঁজে দেখলাম এবারের মহাসাগর দিবসের মূল বিষয় ‘যৌথকর্মে সমুদ্র পাবে পুনরুজ্জীবন’। বটেই তো। মহাসাগর বলে কথা। একা একা কিছু যে করা যাবে না, সেটা বোঝাই যায়। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের যৌথকর্মেই না সমুদ্র ভালো থাকবে।

একটু জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে সমুদ্র একটি দেশের এবং পৃথিবীর অন্যতম বড় প্রাকৃতিক সম্পদ। 

পর্যটন ব্যবস্থাপনা 
খুব সাধারণ দৃষ্টিতে যদি দেখি, তবু সমুদ্রের কাছ থেকে অপার অর্জনের সুযোগ দেখতে পাওয়া যাবে। যার মধ্যে অন্যতম পর্যটনশিল্প। একটু লক্ষ করলেই দেখা যায়, যে যে যতই পাহাড় আর অরণ্য ভালোবাসুক না কেন, বাস্তবতা হলো পৃথিবীর বড় বড় তারকা আর ধনকুবের শ্রেণির লোকজনের অবসর কাটানোর অন্যতম জায়গা হয়ে থাকে কোনো না কোনো সমুদ্রতীরের রিসোর্ট, বাংলো কিংবা প্রাসাদসম বাড়ি। সঙ্গে পাহাড় থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে। কিন্তু সমুদ্রই এসব বিশ্বনন্দিত মানুষকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে থাকে। সাধারণ পর্যটকেরাও সমুদ্রের কাছেই যায় সম্ভবত বেশিই। 

আমাদের আছে তেমন অনন্য সুন্দর আর অপূর্ব এক বিশাল সমুদ্র সম্পদ। কিন্তু অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা সেই অসীম সম্পদকে তেমন কোনো কাজেই লাগাতে পারিনি, পারছি না আর পারব বলেও মনে হয় না। কারণ এত বিশাল আর বৈচিত্র্যপূর্ণ ও দীর্ঘতম একটা সমুদ্রতট পেয়েও আমাদের সব পর্যটন কার্যক্রম সেই এক কলাতলী, সুগন্ধা আর সেন্ট মার্টিন ঘিরে। তাও আজকাল রুচিমান মানুষজন, সাধ্য আছে এমন লোকজন আজকাল আর কক্সবাজার যেতে চান না। 

কেন জানেন? দূষণ, নোংরা, অব্যবস্থাপনা আর অরাজকতার জন্য। যেটা আপনি বাস থেকে নেমে হেঁটে বিচের কাছাকাছি যাওয়া-আসা করলেই বুঝতে পারবেন। 

প্রাকৃতিক সম্পদ 
এরপর সমুদ্রের মাঝে পাওয়া শত রকমের মাছ ও জলজ খাবার পুরো পৃথিবীর মানুষের কাছেই অত্যন্ত লোভনীয় এবং দামি খাবারের তালিকায় থাকে সব সময়। লাখো কোটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়ে থাকে সমুদ্রের এসব মাছ আর নানা রকম সামুদ্রিক খাবারের বিকিকিনি করে। 

কিন্তু আমরা আমাদের এই প্রাকৃতিক সম্পদ আদৌ ব্যবহার করতে পারছি না। আমাদের এত বড় সামুদ্রিক এলাকা থাকার পরও পমফ্রেট বা রুপচাঁদা, কয়েক ধরনের কোরাল আর কাঁকড়া ছাড়া তেমন কিছু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি। সেগুলো রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এখনো অনেক দূরের বিষয়। এর অন্যতম কারণ দূষণ আর অব্যবস্থাপনা। আমাদের দেশের সব শিল্পকারখানার সব রকম বর্জ্য রিসাইকেল না হয়ে খাল, বিল, নদীনালা হয়ে শেষপর্যন্ত সমুদ্রেই পতিত হয়। এগুলো আমাদের সমুদ্রদূষণের অন্যতম কারণ। 

বন্দর ব্যবস্থাপনা 
সমুদ্র মানেই বন্দর। পুরো পৃথিবীতেই যার অবদান সেই দেশের অর্থনীতির জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশও তার বাইরে নয়। একাধিক বিশাল বিশাল সমুদ্রবন্দর আছে আমাদের। কিন্তু দিন দিন সমুদ্রসংলগ্ন নদনদীগুলো নাব্যতা হারিয়ে সমুদ্র সম্পদকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে বেশ আগে থেকেই। সেই সঙ্গে আছে নদী ভরাট, দখল, সমুদ্র তীরবর্তী নদনদীগুলোর অসহনীয় দূষণ। যার প্রভাব গিয়ে পড়ছে শেষ পর্যন্ত সমুদ্রের ওপর। আর যার ফলে বিশাল সমুদ্রের কাছ থেকে পাওয়া অপার সম্পদ আমরা আহরণ করতে পারছি না, পারছি না আমাদের সমুদ্রকে সঠিক সম্পদে রূপান্তর করে অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে। যার অন্যতম কারণ সমুদ্র অব্যবস্থাপনা, দূষণ আর দখল সাম্রাজ্যের প্রসার আর প্রভাব। 

অথচ শুধু দূষণ কমিয়ে, শিল্পকারখানার সব বর্জ্য রিসাইকেল করে, খাল, নদনদী ভরাট ও দখল বন্ধ করে, সমুদ্রের দূষণ রোধ করতে পারলেই আমাদের সমুদ্র সম্পদ দিয়ে অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ সুগম করতে পারতাম। 

প্রতিটি বিষয়ই যৌথভাবে সম্পন্ন করার বিষয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, পর্যটক, স্থানীয় মানুষ ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এই চারটি স্টেকহোল্ডার যৌথভাবে সচেতন না হলে, কাজ না করলে আমাদের সমুদ্র ভালো থাকবে না। দূষণ বাড়তে থাকবে। শেষ পর্যন্ত আমাদের অপার সম্ভাবনা সাগরের অথই জলে ভেসে যাবে।

বায়ুদূষণ বেড়েছে ঢাকায়, বিপর্যস্ত কায়রো

ঢাকার তাপমাত্রা কমবে

বায়ু দূষণে তৃতীয় স্থানে ঢাকা, শীর্ষে দিল্লি

ঢাকায় সকালে তাপমাত্রা আবারও ১৬ ডিগ্রির ঘরে

সকালে সূর্যের দেখা নেই, কুয়াশাচ্ছন্ন ঢাকার আকাশ

ঢাকায় বেড়েছে বায়ুদূষণ, দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় কাবুল

পৌষ মাসে নেই শীতের দেখা, বেড়েছে ঢাকার তাপমাত্রা

আজ ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণে বছরে প্রাণ হারাচ্ছে ১০ লাখ মানুষ

ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, আজও দূষণে শীর্ষে দিল্লি