পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে অনেক দেশ বা অঞ্চলই। আর এ ক্ষেত্রে আরব আমিরাতের দুবাই যা করার কথা ভাবছে, তা চমকে দেবে যে কাউকে। দুবাইয়ের ৭০ কিলোমিটারের (৪৩ মাইল) বেশি উপকূলজুড়ে ১০ কোটির বেশি ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
কার্বনমুক্ত টেকসই শহর গড়ে তুলতে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ইউআরবি দুবাইয়ের উপকূল সংস্কারের এই প্রকল্পের মূলে। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে দুবাই ম্যানগ্রোভস। ম্যানগ্রোভ এমন বৃক্ষ ও গুল্ম, যা উপকূলীয় অঞ্চলে জন্মায় এবং ওই এলাকার সমগ্র বাস্তুতন্ত্রকে সাহায্য করে।
প্রস্তাবিত এই ম্যানগ্রোভ অরণ্য প্রতিবছর ১২ লাখ টন কার্বন শোষণে সক্ষম হবে, যা শহরের সড়ক থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার গ্যাসচালিত যানবাহন সরিয়ে নেওয়ার সমান বলে জানিয়েছে ইউআরবি।
‘উপকূলীয় ক্ষয় এবং ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি দুবাইসহ যে কোনো উপকূলীয় শহরের জন্য উদ্বেগের বিষয়। ম্যানগ্রোভ হলো এসব সমস্যায় প্রকৃতির নিজস্ব প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।’ বলেন নগর পরিকল্পনাবিদ এবং ইউআরবির প্রতিষ্ঠাতা বাহারাশ বাঘেরিয়ান।
পরিকল্পনাটি এখন গবেষণার পর্যায়ে আছে বলে জানান তিনি। আপাতত ছয়টি অঞ্চলকে বাছাই করা হয়েছে। এগুলো হলো জাবেল আলি বিচ, দুবাই মেরিনা বিচ, জুমেরিয়া পাবলিক বিচ, উম সুকিম বিচ, মারকাতো বিচ ও দুবাই আইল্যান্ডস বিচ। বাঘেরিয়ান আশা করছেন, প্রকল্পটি ২০৪০ সাল নাগাদ শেষ করতে পারবেন।
বাঘেরিয়ানের মতে, বেশ কয়েকটি পরিবেশগত এবং শহুরে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করাই উদ্দেশ্য প্রকল্পটির। প্রাথমিক লক্ষ্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করা। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা হ্রাস করায় ম্যানগ্রোভের প্রাকৃতিক ক্ষমতার মাধ্যমে এটি অর্জন করা সম্ভব। তা ছাড়া এরা সরাসরি বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড অপসারণ করে।
ইউএস ন্যাশনাল এটেমাসফরিক অ্যান্ড ওশানিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মতে, ম্যানগ্রোভগুলো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনের চেয়ে ১০ গুণ দ্রুত কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করতে সক্ষম এবং তারা তারপর কার্বনকে তিন থেকে পাঁচ গুণ বেশি ঘনত্বে সঞ্চয় করতে পারে।
‘আমরা ম্যানগ্রোভগুলোকে দক্ষতার সঙ্গে লাগানোর জন্য ড্রোনের মতো অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ও ম্যানগ্রোভ বনের স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধি পরীক্ষায় রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে নজর দিচ্ছি।’ বলেন বাঘেরিয়ান।