ঈদে মুক্তি পাওয়া রায়হান রাফী পরিচালিত তাণ্ডব সিনেমার জয়জয়কার সারা দেশে। সবাই যখন শাকিব খান অভিনীত সিনেমাটির প্রশংসা করছেন, দাবি তুলছেন শো বাড়ানোর, তখন টাঙ্গাইলের একটি মিলনায়তনে প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ঈদ উপলক্ষে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আউলিয়াবাদ অডিটরিয়ামে আয়োজন করা হয়েছিল ‘তাণ্ডব’ সিনেমার প্রদর্শনী। টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকায় অডিটরিয়াম ভাড়া নিয়ে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার হেড অব মার্কেটিং কামরুজ্জামান সাইফুল। পাঁচ দিনের ভাড়া অগ্রিমও দিয়েছিলেন তিনি। সাইফুল জানান, ঈদের আগের দিন শুক্রবার থেকেই স্থানীয় মসজিদ ও মাদ্রাসা থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাণ্ডব সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধ করতে বলা হয়। ওই দিন বিকেলেই পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়। এরপর সিনেমা প্রদর্শনের বিরুদ্ধে পারকি ইউনিয়ন ওলামা পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়, যা স্থানীয় দর্শকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে। এসব উপেক্ষা করে প্রদর্শনী চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সাইফুল। ঈদের দিন মাত্র ২০-২৫ জন দর্শক নিয়ে সন্ধ্যার শো চলে। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার প্রতিবাদের মুখে প্রদর্শনী বন্ধ করে দিতে হয় তাঁকে।
বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার জন্ম দেয়। গণমাধ্যমকে সাইফুল বলেন, ‘সব জায়গা থেকে সিনেমা প্রদর্শনের অনুমতি নেওয়া ছিল। সার্টিফিকেশন বোর্ডের ইউনিভার্সেল রেটেড সার্টিফিকেট ছিল। তবু সিনেমা প্রদর্শনীতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমি হাত জোড় করে মাফ চেয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময়ের আরজি জানিয়েছি। আলেম সমাজ অনড়।’
এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিনেমা-সংশ্লিষ্টরা। নির্মাতা আশফাক নিপুন গতকাল মধ্যরাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘তৌহিদী জনতার হুমকির কারণে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে তাণ্ডব সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ। সিলেটে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ। আর প্রধান উপদেষ্টা আপনি এখনো পড়ে আছেন চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে? বন্দরের ব্যাপারে যেভাবে যেকোনো প্রতিরোধ মোকাবিলার ঘোষণা আসে। কিন্তু মব নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সে রকম কঠোর প্রতিরোধের ঘোষণা কবে আসবে আপনার কাছ থেকে?’
আশফাক নিপুন আরও লিখেছেন, ‘অবিলম্বে কালিহাতীতে তাণ্ডব প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন। যেকোনো পর্যটনকেন্দ্র, পাবলিক প্লেসকে ঝুঁকিমুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। সবার আগে মবের উল্লম্ফন বন্ধ করেন।’