সাক্ষাৎকার

দীপা চরিত্রটি আমি জীবন থেকে ধারণ করেছি

একজন নারীর জীবনসংগ্রামের গল্প নিয়ে লিসা গাজী বানিয়েছেন ‘বাড়ির নাম শাহানা’। গুপী বাঘা প্রোডাকশনস ও কমলা কালেকটিভ প্রযোজিত সিনেমাটি ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। সিনেমার গল্প, শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন দেশের উৎসবে প্রদর্শনের পর কেমন ছিল দর্শকদের প্রতিক্রিয়া—এমন নানা বিষয়ে কথা বলেছেন সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রের অভিনেত্রী আনান সিদ্দিকা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এস রানা

সিনেমার চিত্রনাট্য করেছেন আপনি ও নির্মাতা লিসা গাজী। বলছেন বাস্তব ঘটনার প্রতিচ্ছবি। কোন ধরনের বাস্তবতার কথা বলছেন?

সিনেমার গল্প এক নারীকে ঘিরে। এই চরিত্র আমাদের দেখা বহু মানুষের নানা বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি, যেমন তার বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা আমাদের পরিচিত একজনের জীবন থেকে নেওয়া। জীবনসংগ্রামে আমার মা-খালাদের যেমন দেখেছি, তার খণ্ডচিত্র এসে মিশেছে চরিত্রটিতে। চরিত্রগুলোর অনেকর সংলাপ আমাদের চেনা মানুষের কাছ থেকে নেওয়া। সব মিলিয়ে বলতে পারেন, এ দেশের চেনাজানা গল্প দর্শকেরা খুঁজে পাবেন এখানে। অনেকের জীবনের সঙ্গেও মিলে যাবে।

কী কারণে মনে হলো, এই সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে আপনার অভিনয় করা উচিত?

লিসা ও আমি অনেক বছর একসঙ্গে কাজ করছি। থিয়েটার করছি, নাচ করছি, নানা ধরনের অ্যাকটিভিটিস করছি। ও আমাকে খুব ভালো বোঝে, চেনে। যখন চিত্রনাট্যটি প্রায় গুছিয়ে এনেছি, তখন লিসা বলল, দীপা চরিত্রটায় আমি তোকে দেখতে পাই। তুই করলে ভালো হবে। এরপর নানা আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে দীপা চরিত্রে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নিই।

চরিত্রটি ধারণ করতে কষ্ট হয়েছে? আপনি এই চরিত্রের সঙ্গে কতটা পরিচিত?

খুব একটা কষ্ট হয়নি। তবে সিনেমার টেকনিক্যাল বিষয়গুলো বুঝতে একটু কষ্ট হয়েছে। আমার মা-খালারা আট বোন, আমাদের নানাবাড়ি গাজীপুরের কালিয়াকৈরে। নানাবাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল। মা-খালা আর নানাবাড়ির আশপাশের মানুষেরা এই চরিত্রের মডেল। তাদের জীবনসংগ্রাম, চলন-বলন এমনকি সংলাপে যে আঞ্চলিকতা, সেটাও আমার নানাবাড়ির অঞ্চলের। সব মিলিয়ে দীপা চরিত্রটি আমি জীবন থেকে ধারণ করেছি।

সহশিল্পীদের সম্পর্কে বলুন।

এই সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, লুৎফর রহমান জর্জ, ইরেশ যাকের, কাজী রুমা, কামরুন্নাহার মুন্নীসহ অনেকে। প্রত্যেকের কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছি। শুটিং চলাকালে টেকনিক্যাল অনেক কিছু তাঁরা আমাকে শিখিয়েছেন।

এটা কি আপনার প্রথম ফিচার ফিল্ম?

হ্যাঁ। এর আগে আমি একটা সিনেমায় কাজ করেছি। আবরার আতহার পরিচালিত সিনেমাটির নাম ‘লাইফ ইন আদার ওয়ার্ডস’। সেটি ছিল শর্টফিল্ম।

এখন তো চারদিকে অ্যাকশন, থ্রিলার সিনেমার চাহিদা দেখা যাচ্ছে। এমন সময় বাড়ির নাম শাহানার মতো নন-অ্যাকশন সিনেমা কতটা দর্শক টানতে পারবে বলে মনে করছেন?

ঠিকই বলেছেন। এখন চারদিকে অ্যাকশনের বেশ ডিমান্ড। কিন্তু এত অ্যাকশনের মধ্যেও মানুষ একটু রিলিফ চায়। অনেকে একটু ভিন্ন গল্প দেখতে চায়। এই সিনেমা সেই চাহিদা পূরণ করবে। খেয়াল করলে দেখবেন, এত অ্যাকশনের মধ্যেও জাহিদ হাসান অভিনীত ‘উৎসব’ সিনেমাটি কত দর্শক টেনেছে। এই সময়ের অন্যতম ব্যবসাসফল সিনেমা হয়ে উঠেছে। তাই আমাদের সিনেমাটি নিয়েও আমরা শতভাগ আশাবাদী।

সিনেমাটি বিশ্বের বেশ কিছু উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে, পুরস্কৃত হয়েছে। সেখানকার দর্শক বা সমালোচকদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?

বিদেশিরা বাংলা সংলাপের অনেক কিছু সঠিকভাবে বুঝতে পারবে না। তবু পুরো সিনেমা দেখে তারা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। প্রশংসা করেছে। মুম্বাই উৎসবে সিনেমাটি জেন্ডার সেনসিটিভিটি অ্যাওয়ার্ড জিতেছে, লন্ডনে বিএফআই ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে বেস্ট অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড জিতেছে। আরও বেশ কিছু পরুস্কার জিতেছে সিনেমাটি। সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতা বেশ ভালো।

সিনেমার গান আগে থেকে মুক্তি দিলে এবং সেটা যদি শ্রোতাদের ভালো লাগে, তবে সিনেমার প্রতি আগ্রহ বাড়ে। কিন্তু এই সিনেমার গান রিলিজ হলো সিনেমা মুক্তির কয়েক দিন আগে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন গান নিয়ে?

আসলে তা-ই। গানগুলো আরও আগে রিলিজ দিতে পারলে ভালো হতো। আমরা তো নতুন। অনেক কিছু শিখছি। পরেরবার ভুলগুলো শুধরে নেব। গানগুলো সবে মুক্তি পেল, এখন পর্যন্ত ভালো সাড়া পাচ্ছি।

নতুন কোনো সিনেমার পরিকল্পনা করছেন?

আমি ও লিসা পরবর্তী ফিচার ফিল্মের চিত্রনাট্য প্রায় গুছিয়ে এনেছি। আগামী জানুয়ারিতে প্রি-প্রোডাকশনের কাজ শুরু করব। এটা একটা সাইকোলজিক্যাল ড্রামা ফিল্ম। নাম রেখেছি ‘শাস্তি’।

থিয়েটার করেন বলছিলেন। কোন থিয়েটার?

আমি মূলত লন্ডনে থিয়েটার করেছি। ওখানকার কমলা কালেকটিভ এবং কালচারাল পট গ্লোবাল নামের দুটি দলের সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া, লন্ডনের কোনো নির্দিষ্ট দলের হয়ে থিয়েটার করছি না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দলে অডিশন দিয়ে কাজ করি। পাশাপাশি আমি একজন নৃত্যশিল্পী। ‘লক্ষ্মীট্যারা’ নামে একটি গানের দলও আছে আমাদের। ওই দলের সোহিনী আলম এই সিনেমার মিউজিক করেছেন। সোহিনীর আরেকটা ব্যান্ড ছিল ‘ক্ষ’ নামে। হয়তো নাম শুনে থাকবেন।

ব্যক্তিগত জীবনের কথা জানতে চাই? লন্ডনে কেন গিয়েছিলেন?

আমি পেশায় একজন আইনজীবী। আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছি। বর্তমানে একজন ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি লয়ার। এ বিষয়ে পিএইচডি করতে লন্ডনে গিয়েছিলাম। এখন দেশে ফিরেছি। এখানে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেছি।

রাক্ষস সিনেমায় অভিনয়ের গুঞ্জন নাকচ করলেন ইধিকা

প্রকাশিত হলো শিরোনামহীনের ‘এই অবেলায় ২’

হারমোনি অব ফ্রেন্ডশিপে সোনার বাংলা সার্কাস

‘মিশন: ইম্পসিবল’সহ এসেছে যেসব সিনেমা-সিরিজ

বিয়ে নিয়ে গুঞ্জন ছড়ালেন কনা

বছর শেষে তানজিকার দুই ওয়েব ফিল্ম

আতিফের সঙ্গে একই মঞ্চে গাইবে ব্যান্ড নেমেসিস ও ফুয়াদ

অ্যাভাটারে এআই ব্যবহার করেননি ক্যামেরন

মৃত্যুর ৪ দিন পর প্রকাশিত হলো জেনস সুমনের নতুন গান

নতুন উদ্যমে ফিরছেন তিন নায়িকা