সবুজ ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব শুধু সরকার কিংবা আন্তর্জাতিক সংস্থার একার নয়। এর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি জড়িত আগামী দিনের প্রজন্ম। সেই লক্ষ্যেই দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো টেকসই উন্নয়ন অলিম্পিয়াড ২০২৫, যেখানে দেশের তরুণ শিক্ষার্থীরা পরিবেশ-সচেতনতা এবং টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে নিজেদের ভাবনা ও সমাধান তুলে ধরেছে।
পরিবেশবান্ধব মঞ্চে তরুণদের সমাগম
ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) ২২৭ নম্বর কক্ষে ২৭ আগস্ট বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন। দেশের ২৫টি কলেজ থেকে প্রায় ২৪০ জন শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। তাঁরা টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশ সুরক্ষাবিষয়ক জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও উদ্ভাবনী সমাধান বিনিময়ের সুযোগ পান।
অলিম্পিয়াডটি যৌথভাবে আয়োজন করে আইইউবিএটির পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ, টেকসই বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, গ্রেটার ঢাকা আরসিই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানভিত্তিক এলাকা উন্নয়ন কর্মসূচি। অনুষ্ঠানে সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষক ছিল ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।
সম্মানিত অতিথিদের উপস্থিতি
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউনেসকো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ও প্রধান ড. সুসান ভাইজ। সভাপতিত্ব করেন আইইউবিএটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রব। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ঝুঁকিপ্রবণতা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ মোনিরুজ্জামান খান। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের মানবিক জরুরি কার্যক্রম ও জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন পরিচালক দুলন জোসেফ গোমেস। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী কলেজগুলোর অধ্যক্ষরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন।
আলোচনা, প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার
অনুষ্ঠানে ছিল মুক্ত সংলাপ, অংশগ্রহণমূলক আলোচনা ও জ্ঞানভিত্তিক প্রতিযোগিতা। শিক্ষার্থীরা পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ভাবনী সমাধান প্রস্তাব করে। অলিম্পিয়াডের সেরা ১০ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়।
‘দ্বিতীয় টেকসই উন্নয়ন অলিম্পিয়াড শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি করবে এবং তাদের টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে সক্রিয় ভূমিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করবে। অধ্যাপক ড. আব্দুর রব উপাচার্য, আইইউবিএটি
আইইউবিএটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রব বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, দ্বিতীয় টেকসই উন্নয়ন অলিম্পিয়াড শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি করবে এবং তাদের টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে সক্রিয় ভূমিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আইইউবিএটি পরিবেশ শিক্ষা প্রসার এবং সবুজ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সামাজিক ও একাডেমিক দায়িত্ব পালন করছে।’
আইইউবিএটির পথচলা
বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আইইউবিএটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯১ সালে, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. এম আলিমউল্লাহ মিয়ানের উদ্যোগে। বর্তমানে এখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীর পাশাপাশি এশিয়া ও আফ্রিকার ১২টি দেশের শতাধিক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন।
ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়ে উঠেছে বৈচিত্র্যময় ও প্রাণবন্ত শিক্ষাবান্ধব পরিবেশের প্রতীক।