হোম > শিক্ষা

ভারতে উচ্চশিক্ষা: আইসিসিআর বৃত্তি পেতে চাইলে

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর) ভারত সরকারের একটি স্বায়ত্তশাসিত সাংস্কৃতিক সংগঠন। বিশ্বব্যাপী সম্পর্ক বৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদার করতে ১৯৫০ সালে এ প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়। এই বৃত্তির আওতায় প্রতিবছর প্রায় ৭৩টি দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। বিস্তারিত জানিয়েছেন কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিসিআর স্কলার মো. জুবায়েদ হোসেন

প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রায় ২০০ জন মেধাবী শিক্ষার্থী এই বৃত্তির মাধ্যমে পড়ার সুযোগ পায়। তাঁদের মধ্যে স্নাতক পর্যায়ে ১৪০ জন, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৪০ জন ও পিএইচডিতে ২০ জন। ২০২২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অর্থাৎ ‘সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন’ অনুষ্ঠানে এসে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘সুবর্ণজয়ন্তী স্কলারশিপ’ নামে একটি স্কিমের ঘোষণা দেন। এই স্কিমের আওতায় আরও ৫০০ আসন বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া ‘লতা মঙ্গেশকর ডান্স অ্যান্ড মিউজিক স্কলারশিপ’ নামেও একটি স্কিম রয়েছে। এই বৃত্তির আওতায় স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডির জন্য আবেদন করা যাবে। এ ছাড়া সায়েন্স, আর্টস, কমার্স, সোশ্যাল সায়েন্স ও অন্য বিষয়ের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। তবে মেডিকেল সায়েন্সের ক্ষেত্রে এই বৃত্তি দেওয়া হয় না।

বৃত্তির সুযোগ-সুবিধা

  • এই বৃত্তি পেতে আবেদন করার জন্য কোনো ফি লাগবে না
  • শিক্ষার্থীদের কোনো টিউশন ফি দিতে হবে না
  • কোর্স অনুসারে শিক্ষার্থীরা প্রতি মাসে স্টাইপেন্ড পাবেন—
    ক. স্নাতক ১৮ হাজার রুপি; 
    খ. স্নাতকোত্তর ২০ হাজার রুপি গ. পিএইচডি ২২ হাজার রুপি
  • প্রত্যেক শিক্ষার্থী মাসে তাঁর আবাসন খরচ বাবদ সর্বোচ্চ ৬,৫০০ রুপি পাবেন।
  • এ ছাড়া চিকিৎসাসহ অন্য সুবিধা পাওয়া যাবে। 

আবেদনের যোগ্যতা

  • স্নাতকে আবেদনের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অবশ্যই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ৬০ শতাংশ নম্বর থাকা লাগবে। (সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর)
  • স্নাতকোত্তরে আবেদনের জন্য একজন শিক্ষার্থীর স্নাতকে কমপক্ষে ২.৫ থাকা লাগবে। (সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪০ বছর)
  • পিএইচডির ক্ষেত্রে স্নাতকোত্তরে ভালো ফল ও স্বীকৃত জার্নালে কিছু প্রকাশনা থাকতে হবে। (সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫০ বছর)
  • স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘স্টাডি গ্যাপ’ নিয়ে চিন্তা নেই। পিএইচডির শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ২ বছরের স্নাতকোত্তর থাকা ভালো। 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • পাসপোর্ট।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র (ইংরেজিতে)।
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)।
  • শিক্ষার্থীর সিগনেচারের ছবি।
  • মেডিকেল ফিটনেস সনদ।
  • সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট।
  • ২টি রেফারেন্স লেটার।
  • ইংরেজিতে ৫০০ শব্দের একটি প্রবন্ধ।
  • পিএইচডির জন্য গবেষণা প্রস্তাবনা।
  • কোনো সনদ বাংলায় থাকলে ইংরেজিতে রূপান্তর করতে হবে।
  • নাট্যকলা, নৃত্য বা সংগীতের শিক্ষার্থীদের অভিনয় বা গান ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা ভিডিও লিংক।
  • সকল সহশিক্ষা কার্যক্রমের সনদ। 

উল্লেখ্য, সব ছবি, সনদ, ভিডিওর সাইজ আইসিসিআরের ওয়েবসাইটে দেওয়া গাইডলাইন থেকে জেনে নিতে হবে। রেফারেন্স লেটার শিক্ষার্থীর আগের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের কাছ থেকে নেওয়া উত্তম। 

আবেদন পদ্ধতি
আবেদনের জন্য আইসিসিআরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আবেদন ফরমে চাওয়া সকল তথ্য সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করে পুনরায় দেখে আবেদন পাঠাতে হবে। আবেদন সফল হওয়ার সংবাদটি ই-মেইলে ও আপনার প্রোফাইল থেকে জানতে পারবেন। 

আবেদনের পরবর্তী ধাপ
প্রাথমিকভাবে আবেদন গৃহীত হলে আরও ২টি বিশেষ ধাপ থাকে। একটি হলো ‘ইপিটি টেস্ট’। এটি একটি লিখিত পরীক্ষা, যেখানে আপনার ইংরেজি দক্ষতার যাচাই হবে। ইপিটি টেস্টে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ডাকা হবে ভাইভার জন্য। যাঁরা ভাইভায় ভালো করবেন, তাঁরাই এই বৃত্তির জন্য মনোনীত হবেন। 

চূড়ান্ত মনোনয়ন ও ভর্তি কার্যক্রম
চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন পাওয়া শিক্ষার্থীরা হাইকমিশন থেকে মেইল পাবেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে জানাতে হবে যে শিক্ষার্থী এই সুযোগ নেবেন কি না। সুতরাং ভাইভার পর সব সময় পোর্টাল ও মেইলে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। অফার লেটার পেলে তা দিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। ভিসা হয়ে গেলে হাইকমিশন ও প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা মেনে ভারতে আসতে হবে এবং ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে হবে। ভারতে এসেই পাসপোর্টের মাধ্যমে একটি সিম কিনে নিতে হবে। এরপর আইসিসিআর অফিসে গিয়ে রিপোর্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে রিপোর্ট করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে HIV টেস্টের জন্য পেপার নিয়ে নির্দেশিত মেডিকেল কলেজ থেকে টেস্ট করাতে হবে।

HIV টেস্টের রেজাল্ট পজিটিভ হলে শিক্ষার্থীকে দেশে ফিরে যেতে হবে। HIV-এর রিপোর্ট, বাসা ভাড়ার অ্যাগ্রিমেন্ট পেপার, সব সনদসহ অন্যান্য কাগজপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাজে জমা দিয়ে ভর্তির কাজ শেষ করতে হবে। ভর্তির পরেই FRRO-এর আবেদন করতে হবে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও কাগজপত্র বিশ্ববিদ্যালয় ও আইসিসিআর দেবে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে যেহেতু একটু সময় লাগবে, তাই বাংলাদেশ থেকে আসার সময় প্রথম এক বা দুই মাসের খরচ শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে আসাই উত্তম। ২০২৪-২০২৫ সেশনে আবেদন শুরু হবে ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ও আবেদনের শেষ তারিখ: ৩০ এপ্রিল, ২০২৪।

অনুলিখন: আশিকুর রহমান

কৃষি গুচ্ছের ভর্তি আবেদনের সময় বাড়ল

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪-এর আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: জবি উপাচার্য

এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

শিক্ষার্থীদের বিজয় দিবসের ভাবনা

দিনে রাজমিস্ত্রির কাজ রাতে পড়াশোনা

২৭তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছে বাংলাদেশ দল

গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে আইইইই এসটিআই ৫.০ আন্তর্জাতিক সম্মেলন

ব্যাংকে ব্যবহৃত ১০টি ইংরেজি বাক্য (পর্ব-৪)

প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা: ইংরেজি বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সাজেশন (পর্ব-১)

বেইজিং নরমাল ইউনিভার্সিটিতে সম্পূর্ণ অর্থায়িত বৃত্তি