মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ
ঢাকার মোহাম্মদপুরের আসাদ অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। ১১ নভেম্বর এই প্রতিষ্ঠানে এক উৎসবমুখর দিন উদ্যাপিত হলো। সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অডিটরিয়ামে ‘বয়েস উইংস ইংলিশ ভার্সন’-এর কালচারাল ক্লাব এবং ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব যৌথভাবে আয়োজিত মধু মেলা ও ফেস্টের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের পর অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর গাওয়া হয় জাতীয় সংগীত। মূল পর্বে অতিথিদের অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্যে মনোমুগ্ধ হয়ে ওঠে পুরো অডিটরিয়াম প্রাঙ্গণ।
প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ দিলরুবা বেগম শিক্ষার্থীদের সাফল্য, সৃজনশীলতা ও দলগত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘সারা দেশে প্রিপারেটরি একটি পরিচিত প্রতিষ্ঠান। এটি কেবল তোমাদের জন্যই সম্ভব হয়েছে। আমরা অনেক নিয়ম ও নীতি করেছি, তবে তোমাদের আন্তরিকতা ছাড়া তা সম্ভব হতো না। এটাই ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি। তুমি এইচএসসি শেষ করে যে উচ্চশিক্ষার পরিবেশে যাবে, সেখানে আজকের ক্লাব কার্যক্রম, সাহস, শক্তি ও অভিজ্ঞতা তোমাকে সাহায্য করবে। মানুষ এক দিনে সব শিখতে পারে না, তবে চেষ্টা এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে ধীরে ধীরে সবকিছু অর্জন করা সম্ভব।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ও উপাধ্যক্ষ মো. খালেদ মোশাররফ, বিশেষ অতিথি আজকের পত্রিকার শিক্ষা ও ক্যারিয়ার বিভাগের প্রধান এবং পাঠকবন্ধুর প্রধান সমন্বয়কারী মো. আব্দুর রাজ্জাক খান এবং এমপিএসসির ক্লাব মডারেটর ও প্রভাষক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সায়েম।
মো. খালেদ মোশাররফ বলেন, ‘একজন নেতাকে দৃষ্টিবিষয়ক, উদ্যমী ও আকর্ষণীয় হতে হবে। এ তিনটি গুণ থাকলে তিনি সহযাত্রীদের অনুপ্রাণিত করতে পারবেন। তবে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সহশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকা উচিত।’
আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, ‘মা-বাবার সম্পর্কের পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক। যেভাবে আপনি মা-বাবাকে শ্রদ্ধা করেন ও ভালোবাসেন, তেমনি শিক্ষককেও শ্রদ্ধা করা এবং ভালোবাসা উচিত।’
আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, ‘আজকের অনুষ্ঠানটি দুটি ক্লাবের যৌথ আয়োজন। ফেস্টটি মে মাসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘ বিরতির পর আমরা পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করেছি। যাঁরা বিজয়ী হয়েছ, তাঁদের অভিনন্দন জানাই। এ ছাড়া আজকের পত্রিকা এবং পাঠকবন্ধুকে ধন্যবাদ সহযোগিতা করার জন্য।’
এরপর শুরু হয় পুরস্কার বিতরণ পর্ব। ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ফেস্ট এবং মধু মেলার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও সনদ তুলে দেন অধ্যক্ষ দিলরুবা বেগম। এ সময় শিক্ষার্থীদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস পুরো অডিটরিয়ামে দেখা যায়। ক্লাব কমিটির সদস্যদের দেওয়া হয় বিশেষ স্মারক সম্মাননা। এ ছাড়া ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতার সেরা তিনটি বাঁধানো ছবি অতিথিদের উপহার দেওয়া হয়।
শর্ট ফিল্মে প্রথম হওয়া ফেরদৌস হোসেন আদিয়ান বলেন, ‘প্রথম হওয়ায় খুব ভালো লাগছে। আমি কখনো আশা করিনি যে প্রথম হব।’
কালচারাল ক্লাবের সভাপতি মোস্তফা সফওয়ান প্রতীক বলেন, ‘স্বল্পতম সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠানটি সফল করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এ জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানাই ক্লাবের সদস্য, মডারেটর, শিক্ষক এবং অধ্যক্ষ ম্যামকে।’
ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাবের সভাপতি ফারাবী সাফকাত খান বলেন, ‘আমি নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার আশা, ভবিষ্যতে ব্যাচগুলো আমাদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে এবং আরও এগিয়ে যাবে।’
এই আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার ছিল আজকের পত্রিকা এবং অনুষ্ঠান সহযোগী ছিল পাঠকবন্ধু।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে অনুষ্ঠিত হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ব্যান্ড জিরো পয়েন্টের কণ্ঠে ‘নিঃস্ব করেছো আমায় কী নিঠুর ছলনায়’ এবং ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে’ গানগুলোর সুরে মুখর হয়ে ওঠে পুরো অডিটরিয়াম প্রাঙ্গণ। শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অতিথিদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি সত্যিই হয়ে ওঠে উদ্দীপনা ও সাফল্যে ভরা একটি দিন।