বেতন বৃদ্ধি ও উচ্চতর গ্রেড নিয়ে আন্দোলন করা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা সরকারের দেওয়া ‘আশ্বাস’ বাস্তবায়নে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। একই সঙ্গে ‘লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেডে’ অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়া শিক্ষক ফাতেমা আক্তারের পরিবারকে রাষ্ট্রীয় ক্ষতিপূরণ ও পূর্ণাঙ্গ পেনশন এবং আহত শিক্ষকদের রাষ্ট্রীয় খরচে চিকিৎসা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকনেতারা ২৯ নভেম্বরের মধ্যে তিন দফা আশ্বাস পূরণ, নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা হলে ৩০ নভেম্বর থেকে আবারও লাগাতার কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে দশম গ্রেডে বেতন, উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসন ও শতভাগ পদোন্নতির দাবিতে এ পরিষদের ব্যানারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে শাহবাগ থানার সামনে তাঁদের আটকে দিয়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করে শহীদ মিনারে ফেরত পাঠায়। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন ৷
এরপর গত রোববার রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাতেমা আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ১০ নভেম্বর পরিষদের নেতাদের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সভার যেসব সিদ্ধান্ত ও সে অনুযায়ী দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তির আলোকে তিন দফা দাবির প্রজ্ঞাপন বা দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে ৩০ নভেম্বর থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি থাকবে।
প্রাণ হারানো শিক্ষক ফাতেমা আক্তারকে স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, ‘আহত শিক্ষকদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিহত শিক্ষক ফাতেমা আক্তারের পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষতিপূরণসহ তাঁকে পূর্ণ পেনশন প্রদানের দাবি করছি।’