যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে জরুরি হোয়াইট হাউসে একটি বৈঠক ডেকেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী সোমবার রাতে (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল) ওভাল অফিসে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ভেনেজুয়েলার ওপর মার্কিন প্রশাসনের চাপ বাড়ানোর অংশ হিসেবে এই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, বৈঠকে ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ও জাতীয় নিরাপত্তা দলের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস এবং ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার।
সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান সাগরের ভেনেজুয়েলা উপকূলে মাদকবাহী নৌযান লক্ষ্য করে মার্কিন হামলা ও সামরিক উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হয়েছে। ‘অপারেশন সাউদার্ন স্পিয়ার’ নামে পরিচিত একটি সামরিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সেখানে ১৫ হাজার সৈন্য ও এক ডজনের বেশি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। পাশাপাশি ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলার মাদক পাচার রোধে সমুদ্রের পাশাপাশি স্থলপথেও খুব শিগগিরই অভিযান চালানো হবে।
সম্প্রতি ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি সতর্কবার্তা জারি করে এয়ারলাইন, পাইলট এবং অপরাধচক্রগুলোকে ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই ঘোষণা থেকে অতিরিক্ত কোনো অর্থ উদ্ধার করার প্রয়োজন নেই।
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তবে কী কথা হয়েছে সেই সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি। ইতিমধ্যে মাদুরো ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের একটি বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কর্মকর্তাদের দাবি, এই পদক্ষেপের ফলে ভেনেজুয়েলার ভেতরে সামরিক অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আরও শক্তিশালী আইনি ভিত্তি তৈরি হবে।
এদিকে সমুদ্রপথে মাদক বহন করছে এমন সন্দেহে বেশ কিছু নৌযানে মার্কিন হামলা চালানোকে ঘিরে দেশব্যাপী তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, একটি নৌযানে প্রথম হামলায় সবাই নিহত না হওয়ায় পরবর্তী হামলায় পানিতে থাকা জীবিতদের লক্ষ্য করেও আঘাত হানা হয়। এই ধরনের হামলাগুলোতে এখন পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে বলে জানা গেছে।
মার্কিন সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং সিএনএনকে বলেছেন, অভিযোগগুলো সত্য হলে তা সরাসরি যুদ্ধাপরাধ এবং হত্যাকাণ্ড। তিনি জানান, কংগ্রেস এই ঘটনায় জড়িত সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে এবং নির্দেশনা কোথা থেকে এসেছে তা খতিয়ে দেখবে।