পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি হাট ইজারার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হাট থেকে ইজারাদারসহ তাঁর লোকজনকে মারধর করে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেদিন থেকেই হাটের ইজারা তুলছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ বিষয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ইজারাদার।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, পাবনার অন্যতম বড় হাট ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া। এই হাটে কেনাবেচা হয় গরু-ছাগল থেকে শুরু করে সব ধরনের নিত্যপণ্য। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে এমনকি রাজধানী ঢাকা থেকেও কেনাবেচা করতে হাটে আসেন শত শত ক্রেতা-বিক্রেতা। সপ্তাহের প্রতি রবি ও বুধবার আওতাপাড়া হাট বসে।
২ কোটি ৬৭ লাখ ৪১ হাজার টাকায় এক বছরের জন্য (বাংলা ১৪৩১ সন) হাটটি সরকারিভাবে ইজারা পান আব্দুল কুদ্দুস ফকির। ইজারা পাওয়ার পর থেকে হাটের খাজনা আদায় করে আসছিলেন তিনি। গত ৭ আগস্ট সাহাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রমজান আলীর নেতৃত্বে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হাটে ঢুকে ইজারাদার ও হাট কমিটির সদস্যদের মারধর করে বের করে দেন। লুট করে নেন ১২ লাখ টাকা। এরপর থেকে প্রতি হাটে অবৈধভাবে খাজনা আদায় করছেন তাঁরা।
ভুক্তভোগী ইজারাদারের অংশীদার সাহাব উদ্দিন ও আব্দুল মান্নানের দাবি, বিএনপির নেতা-কর্মীদের হুমকিতে তাঁরা হাটে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। খাজনা আদায় করতে না পারায় বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে হাট ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনায় গত ২৭ আগস্ট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তাঁরা। হয় ক্ষতিপূরণ, না হয় হাট তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সাহাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রমজান আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে হাট দখল ও খাজনা তোলার কথা স্বীকার করে সাহাপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রচার সম্পাদক টিক্কা মণ্ডল বলেন, আওয়ামী শাসনামলে তাঁরা খুবই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকতে এমন কাজ করেছেন। এ ছাড়া ইজারাদারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, কত টাকা তাঁদের খরচ হয়েছে সেসব বিষয়ে। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে একটা সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবু তাঁদের হাতে হাট থাকতে দেওয়া যাবে না। কারণ ওরা আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমাদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে।’