বগুড়া: সোনাতলায় উপজেলায় ৬৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে জেল খাটছে ১০ মাস বয়সের এক শিশু। উপজেলার মহিচরন এলাকায় মনোয়ারা ওরফে মনো পাগলির মৃত্যুতে বর্তমানে জেলে রয়েছে ওই শিশু ও দুই নারীসহ মোট সাতজন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মনো পাগলি বেশির ভাগ সময় মহিচরণ বাজারেই থাকতেন। মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন তিনি। বাড়িতে বাজার পৌঁছে দিয়ে ৫-১০ টাকা করে পেতেন। এ আয় দিয়েই কোনোরকম দিনাতিপাত করতেন তিনি। স্থানীয়রা মাঝেমধ্যে তাঁকে খাবার দিত। তবে কারণে অকারণে মানুষকে গালিগালাজ করার কারণে অনেক সময় মারধরের শিকার হতেন মনোয়ারা।
গত ২০ জুন বিকেলে এলাকার শহিদুল ইসলামের চার বছরের শিশু মনোয়ারাকে ইটের টুকরা ছুড়ে মারে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি শহিদুলের বাড়িতে গিয়ে শিশুটিকে মারার চেষ্টা করে। এ সময় শহিদুলের স্ত্রী সীমা আক্তার একটি কাঠের টুকরা দিয়ে তাঁকে আঘাত করেন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। ওই দিন সন্ধ্যায় খাবার খেয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন মনোয়ারা। পরদিন সকালে আর জাগেননি। পরে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় মনোয়ারার স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল ও মহিদুলের বাড়িতে লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায়। শফিকুল ও মহিদুল আপন দুই ভাই। হামলা চালিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের মারধর করে বাড়িতেই অবরুদ্ধ করে রাখেন মনোয়ারার তিন ভাই ও তাঁদের সহযোগীরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে মনোয়ারার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
পরে মনোয়ারার পরিবার হত্যা মামলা করে। এ মামলায় থানা হেফাজতে নেওয়া সাতজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। মামলার আসামি সীমা আক্তার তাঁর ১০ মাসের শিশুকে সঙ্গে নিয়ে জেল খাটছেন।
এদিকে হামলা ও লুটের ঘটনায় সীমা আক্তারের মা বাদী হয়ে মনোয়ারার ভাইয়ের বিরুদ্ধে সোনাতলা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাতলা থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, লুট হওয়া একটি গরু বিবাদীদের কাছে আছে শুনে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বরকে উদ্ধার করে বাদীর কাছের কোনো আত্মীয়ের জিম্মায় দিতে বলেছিলাম। তবে তাঁরা চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আজ সকালে বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।