হোম > সারা দেশ > রাজশাহী

চিড়িয়াখানা ফাঁকা করে আবার প্রাণ ফেরানোর চেষ্টায় রাসিক

 রিমন রহমান, রাজশাহী

রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা পশুপাখিশূন্য। এখন আবার পশুপাখি এনে চিড়িয়াখানার প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা করছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। সে জন্য করা হয়েছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় একসময় উট, হায়েনা, ভালুকসহ নানা বন্য প্রাণী ছিল। এসব একে একে মারা যাওয়ার পরও অজগর, বেবুন, বানর, হনুমানসহ নানা ধরনের পশুপাখি ছিল চিড়িয়াখানায়। রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) উন্নয়ন ও সংস্কারের নামে মেরে ফেলেছে এই চিড়িয়াখানা। অবমুক্ত, অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি তারা বিক্রিও করে দিয়েছে পশুপাখি। এখন আবার পশুপাখি এনে চিড়িয়াখানার প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা করছে রাসিক।

রাজশাহী শহরের মানুষের বিনোদনের চাহিদা পূরণে ব্রিটিশ আমলে ঘোড়দৌড় মাঠে স্বাধীনতার পর উদ্যান ও চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও জেলা প্রশাসক আবদুর রউফ। ১৯৭২ সালে শুরু হয় কার্যক্রম। প্রায় ৩৩ একর জায়গাজুড়ে এই উদ্যান করা হয়।

আগে এর নাম ছিল ‘শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা’। তবে গণ-অভ্যুত্থানের পর সাইনবোর্ডে লেখা হয়েছে, ‘রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা’। সবুজে ঘেরা পরিবেশ আর নানা প্রজাতির পশুপাখি ছিল এই উদ্যানের প্রধান আকর্ষণ। এখানে একসময় উট, হায়েনা, গাধা, বানর, ভালুকসহ বেশ কিছু বন্য প্রাণী ছিল। ভালুকের জন্য পাশাপাশি দুটি নতুন খাঁচাও নির্মাণ করা হয়েছিল। করোনাকালে সিটি করপোরেশন এর সংস্কার ও উন্নয়নকাজ শুরু করে। চিড়িয়াখানার ভেতরেই নির্মাণ করা হয় একটি রিসোর্ট। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এর ভেতরে নভোথিয়েটারও নির্মাণ করেছে।

এসব কাজ চলমান থাকায় করোনা মহামারি-পরবর্তী সময়েও দীর্ঘদিন চিড়িয়াখানাটি বন্ধ থাকে। তখনই খাঁচা ভেঙে ভেঙে পশু-পাখিগুলোর কিছু অবমুক্ত করা হয়। কিছু বিক্রি করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কিছু পশুপাখি অন্য চিড়িয়াখানাকে অনুদান দেওয়া হয়। শুধু শতাধিক হরিণ, দুটি ঘড়িয়াল আর কিছু পাখি ও কবুতর অবশিষ্ট থাকে এ চিড়িয়াখানায়। পরে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে চিড়িয়াখানাটি দর্শনার্থী প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এমন ফাঁকা চিড়িয়াখানা দেখে তখন থেকেই দর্শনার্থীরা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে আসছেন।

তৎকালীন সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছিলেন, এখানে জায়গা কম। এটি চিড়িয়াখানার জন্য উপযুক্ত নয়। এটি উদ্যান হিসেবেই থাকবে। আর শহরের অদূরে একটি সাফারি পার্ক করা হবে।

তবে সরকার পতনের পর সবকিছুই থেমে যায়। এ অবস্থায় সাফারি পার্কের স্বপ্ন দেখা বন্ধ করে চিড়িয়াখানাকেই প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা করছে রাসিক। চিড়িয়াখানার এ পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাংবাদিক আহমদ সফিউদ্দিন। তাঁর ভাষায়, শিশুদের মানসিক বিকাশে বাস্তবে পশুপাখি দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু চিড়িয়াখানা প্রকৃতির বদলে কংক্রিটের স্তূপে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও এভাবে নীরবে একটি চিড়িয়াখানা ধ্বংস করে ফেলার নজির আছে কি না, তিনি সে প্রশ্ন তোলেন।

জানতে চাইলে চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘সংস্কারের সময় খাঁচাগুলো ভেঙে ফেলা হয়। তখন কিছু পশুপাখি অনুদান দেওয়া হয়, কিছু বিক্রি করা হয় এবং কিছু অবমুক্ত করা হয়। এরপর শুধু হরিণ, ঘড়িয়াল ও কিছু পাখি থাকে। কথা ছিল, রাজশাহীতে আলাদা সাফারি পার্ক হবে। কিন্তু ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে সে পরিকল্পনা থেমে গেছে।’

চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ক জানান, এখন চিড়িয়াখানার কর্মীরা নিজ নিজ উদ্যোগে পশুপাখি সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে তিনটি বানর, কিছু খরগোশ ও দুটি হনুমান নতুন করে সংগ্রহ করা হয়েছে। ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে চিঠি দিয়ে ময়ূর চাওয়া হয়েছে। ময়ূরের জন্য খাঁচা নির্মাণ করা হচ্ছে।

এখন চিড়িয়াখানায় তিনটি বানর, ২৪টি খরগোশ, দুটি হনুমান ছাড়াও ১২৩টি হরিণ, ২৪টি খরগোশ, দুটি ঘড়িয়াল ও কিছু পাখি এবং কবুতর আছে। চিড়িয়াখানাটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে তাঁরা কাজ করছেন বলেও জানিয়েছেন ডা. ফরহাদ হোসেন।

কৃষকেরা ধানের বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখেন যে কারণে

প্রাথমিকের শতভাগ বই এলেও সংকট মাধ্যমিকে

নারীকে গলা কেটে হত্যা, সাবেক স্বামী আটক

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে রাজশাহী

রাজশাহীতে প্রাথমিকের শতভাগ বই পৌঁছেছে, বিদ্যালয়গুলোতে যাচ্ছে নতুন বই

রাবি অফিসার সমিতি নির্বাচন: বিএনপিপন্থীদের নিরঙ্কুশ জয়, জামায়াতপন্থীদের ভরাডুবি

বিএনপিতে বিরোধ: রাজশাহীর ৪টি আসনে কোন্দল প্রকাশ্যে

তিনটি গরুর সঙ্গে মোটরসাইকেলের তেলও নিয়ে গেছে চোরেরা

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন: বিএনপির নেতা-কর্মীদের বহনে পশ্চিমে চার জোড়া বিশেষ ট্রেন

চোর সন্দেহে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন: মবের ভুক্তভোগীকে জেল, হাসপাতালে মৃত্যু