কর্মবিরতি শেষে বিদ্যালয়ে ঢুকতে চেয়েছিলেন সহকারী শিক্ষকেরা। তবে অভিভাবকেরা তাঁদের ঢুকতে দেননি। সন্তানদের পরীক্ষা নিয়েছেন তাঁরা নিজেরাই। আজ রোববার সকালে রাজশাহী নগরের বহরমপুর ডিবি আনোয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটে।
পরে একজন শিক্ষা কর্মকর্তা এলে তাঁর মধ্যস্থতায় শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেন। তবে এর আগেই পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। এর আগে উত্তেজিত অভিভাবকেরা বিদ্যালয়ের দুটি ভবনে তালা ঝুলিয়ে পরীক্ষার দায়িত্ব নিজেরাই হাতে নেন। সকাল থেকে তাঁরা পরীক্ষাও নেন।
অভিভাবকদের অভিযোগ, এক সপ্তাহ ধরে বার্ষিক পরীক্ষা চললেও সহকারী শিক্ষকেরা আসেননি। তিনটি বিষয়ে তাঁরাই পরীক্ষা নিয়েছেন। শিক্ষকদের মনোযোগহীনতা ও দফায় দফায় আন্দোলন শিক্ষার্থীদের শেখার মান ভয়াবহভাবে কমিয়ে দিয়েছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। তাই কর্মবিরতি শেষে শিক্ষকেরা এলে তাঁরা তাঁদের প্রবেশ করতে দেননি।
জেসমিন আরা নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘সারা বছর ঠিকভাবে পড়ানো হয়নি আর পরীক্ষা শুরুর পর আবার কর্মবিরতি। আমরা সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় আছি, তাই নিজেরাই পরীক্ষা নিয়েছি।’ স্বপ্না বেগম নামের আরও এক অভিভাবক বলেন, ‘শিক্ষকেরা হঠাৎ হাজির হয়ে পরীক্ষা নিতে চাইলে আমরা স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হই। সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছেন তাঁরাই।’
বিদ্যালয় চত্বরে তালা দেওয়ার সময় বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন সহকারী শিক্ষকেরা। ঘটনাটি জানানো হলে একজন শিক্ষা কর্মকর্তা এসে শিক্ষক-অভিভাবকদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। আলোচনা চলাকালেও দ্বিতীয় শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষা দিতে দেখা যায়।
সহকারী শিক্ষকেরা দাবি করেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাঁরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর পরীক্ষায় অংশ নিতে এলেও অভিভাবকেরা তাঁদের দায়িত্ব নিতে দেননি। সহকারী শিক্ষক আসিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা কর্মসূচির কারণে দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় পরীক্ষা নিতে এসেছি, কিন্তু আমাদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগম বলেন, ‘অভিভাবক ও শিক্ষক উভয় পক্ষের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল। শিক্ষা অফিস থেকে একজন কর্মকর্তা আসার পর আমরা চেষ্টা করেছি আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। শিক্ষকেরা ঢুকেছেন।’