ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, সচিব, পৌর মেয়র এবং পৌর সচিবের নামে নকল সিল বানিয়ে জালিয়াতি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এমন অভিযোগে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম মো. মিনাল শেখ (২০)।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ইসলামপুর পৌর শহরের থানা সংলগ্ন একটি ভবন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাতে উপপরিদর্শক (এসআই) তারেক আহমেদ বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন। সেই মামলায় আজ শুক্রবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১২ ইউপি চেয়ারম্যান-সচিবসহ পৌর মেয়রের নকল সিলমোহর বানিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন খবর পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ইসলামপুর থানা ভবন সংলগ্ন জেকি ভবনে মিনাল কম্পিউটার ও ফটোকপি দোকানে অভিযান চালায় পুলিশ।
এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান, সচিব, পৌর মেয়র এবং পৌর সচিবের নামে ১৯টি নকল সিল জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে ওই দোকানের স্বত্বাধিকারী ছাত্রলীগ নেতা মিনাল শেখকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার বাদী এসআই তারেক আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার সব ইউপি চেয়ারম্যান-সচিব এবং পৌর মেয়র ও সচিবের নকল সিলমোহর ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিলেন মিনাল শেখ। টাকার বিনিময়ে তিনি পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন ও কাগজপত্রে সিলমোহর দেওয়াসহ নকল করে স্বাক্ষরও দিয়েছেন। এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মিনাল শেখের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বেলগাছা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক বলেন, ‘কম্পিউটারের ফটোকপির ব্যবসার আড়ালে মিনাল শেখ দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার সব ইউপি চেয়ারম্যান, সচিব এবং পৌর মেয়র ও সচিবের সিল বানিয়ে নিজেই ব্যবহার করে আসছেন। একজন ফটোকপি ব্যবসায়ী কিংবা কোনো ছাত্রলীগ নেতা যদি জনপ্রতিনিধিদের ও সচিবদের স্বাক্ষর এবং সিলমোহর ব্যবহার করে, তাহলে আমাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া দরকার কী? আমার এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।’
ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন তালুকদার বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মিনাল শেখের দোকান থেকে সিলমোহরসহ চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে ভোটার নিবন্ধন ফরম এবং দুইটি অঙ্গীকার নামার ফটোকপি জব্দ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে মিনাল শেখকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন সুমন বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নামে নকল সিল বানিয়ে ব্যবহার করাটা জঘন্য অপরাধ। অপরাধীদের দলে ঠাঁই নেই। সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মিনাল শেখের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’