জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ফলে দেশে একটা পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় এই ফেলো বলেছেন, ‘এই পরিবর্তন আমরা হেলায় হারাতে চাই না। নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে সব মানুষ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচনের পর আমরা কী চাই, সেসব নিয়ে আমরা একটি নাগরিক ইশতেহার তৈরি করব। আগামী ডিসেম্বরের শেষে জাতীয় নেতাদের কাছে এই নাগরিক ইশতেহার তুলে ধরা হবে। সেই উদ্দেশ্য থেকে নাগরিকদের মতামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। নির্বাচন হয়ে গেলে নাগরিকদের এসব দাবি বাস্তবায়ন নিয়ে সরকারের ওপর আমরা চাপ সৃষ্টি করব।’
প্রাক-নির্বাচনী উদ্যোগের অংশ হিসেবে আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আঞ্চলিক পরামর্শ সভার আয়োজন করে। এতে স্বাগত বক্তব্যে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আগামী দিনে সরকারের যারা প্রত্যাশী, তাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও আমরা এটি ঢুকানোর চেষ্টা করব। আমাদের অবস্থান হলো সরকার আসবে সরকার যাবে, বাংলাদেশের জনগণ থাকবে, দেশটাও থাকবে। সেহেতু আমাদের প্রচেষ্টাকে নাগরিক হিসেবে অব্যাহত রাখতে হবে।’
এর আগে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক-নির্বাচনী উদ্যোগের অংশ হিসেবে সিলেট, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশালে এই পরামর্শ সভা হয়েছে বলেও দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানিয়েছেন।
সভায় রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক নারী, পুরুষ, শিক্ষার্থীর কাছে নির্বাচন-পরবর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা কী এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রত্যাশা কী, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময় দুটি প্রশ্নের জবাবে বেশির ভাগ নাগরিক আগামী সরকারের কাছে সুশাসন এবং নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালনের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া পরামর্শ সভায় অংশগ্রহণকারীরা সুশাসন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, আইনের শাসন, স্থানীয় উন্নয়ন, নারীর অধিকার, ন্যায়বিচার, মেধার ভিত্তিতে চাকরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত দেন। এর বাইরে অনেকে কালোটাকার প্রভাবমুক্ত পরিবেশ, মনোনয়ন-বাণিজ্য বন্ধ করা এবং শিক্ষিত ব্যক্তিদের সংসদ সদস্য পদে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষে মতামত দেন।
সভায় আরও বক্তব্য দেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আমজাদ আলী, এ কে এম মাহবুবুল আলম, জামায়াতে ইসলামীর নেতা ড. শহীদুল্লাহ কায়সার, সিপিবির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান জুয়েল, জেলা সুজনের সম্পাদক ইয়াজদানী কোরায়শী কাজল, এস এম মজিবুর রহমান, নারী উদ্যোক্তা রেবেকা সুলতানা, সালমা আক্তার, সুরাইয়া আক্তার, কাব্য সুমী সরকার এনজিও ব্যক্তিত্ব শরীফুজ্জামান পরাগ, দেলোয়ার হোসেন, তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি জয়িতা তনু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধি নারায়ণ হাজং, অর্যণ চিরান, সাধারণ নাগরিক খন্দকার আব্দুল আলীম প্রমুখ।