হোম > সারা দেশ > ময়মনসিংহ

উদ্ভট এক উটের পিঠে চলছে স্বাস্থ্যসেবা: ডিজির সঙ্গে তর্কের পর অব্যাহতি পাওয়া চিকিৎসক

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ক্যাজুয়ালটির ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফরের সঙ্গে তর্কে জড়ানোর কারণ জানালেন অব্যাহতি পাওয়া চিকিৎসক ধনদেব চন্দ্র বর্মণ। ঘটনার পরদিনই সামনে এসেছে কেন ১৭ বছরেও তিনি পদোন্নতি পাননি—তার পেছনের কারণগুলো।

এর আগে গতকাল শনিবার ডিজি হাসপাতাল পরিদর্শনে গেলে ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জ ডা. ধনদেবের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় এবং অসদাচরণের অভিযোগে কারণ দর্শাতে নোটিশ দেয়।

ঘটনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডা. ধনদেব। তিনি অভিযোগ করেন, অব্যবস্থাপনা, মিসম্যানেজমেন্ট এবং কর্তৃপক্ষের অবহেলায় স্বাস্থ্যসেবা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে। বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা পুরোপুরি উদ্ভট এক উটের পিঠে চলছে। ২০১৩ সালে এমএস করেছি, কিন্তু অপারেশন করার সুযোগও পাইনি। ১৭ বছর পর গিয়ে সহকারী অধ্যাপক হলাম।’

ডা. ধনদেব চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘আমরা সব সময় মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকি যেকোনো দুর্ঘটনা যেন না ঘটে। ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে আমি এখানে আছি। এ পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা বা কেউ কারও সঙ্গে মিসবিহেব করছেন, ক্যাজুয়ালটিতে ভাঙচুর হয়েছে বা কোনো কিছু—এ রকম হয়নি।’

ডা. ধনদেব চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘আমি খুব সুষ্ঠুভাবেই পরিচালনা করছি। আমাদের পরিচালক স্যার, সহকারী পরিচালক স্যার এবং ডেপুটি ডিরেক্টর স্যারের তত্ত্বাবধানে আমরা খুব সুন্দরভাবেই চালাচ্ছি। ডিজির কাছ থেকে গুরুজনের মতো ব্যবহার আশা করেছিলাম। কিন্তু তিনি এসে কী কী সমস্যা, সেগুলো জানতে না চেয়ে ভেতরে কেন টেবিল, এ নিয়ে কথা বলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি তিনবার উনাকে নাম বলার পরেও উনি আমাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কথা বলছিলেন। আমার কিন্তু চাকরি বেশি দিন নেই। আর এক বছর পরেই আমি পিআরএলে চলে যাব। আমি অনেক সিনিয়র ২০১৩-তে আমি এমএস করেছি, আমাকে ২০২৫ সহকারী অধ্যাপক বানাইলো। আমি জেনারেল সার্জারিতে অপারেশন থিয়েটারে হাসপাতালের ভেতরে কোনো অপারেশন করার সুযোগই পাইনি। সেই সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য হয়নি আমার। যেটাই হোক, এই যে প্রেক্ষাপট—এটার জন্য দায়ী আমি মনে করি কর্তৃপক্ষের অবহেলা। মানে আমাদের এ রকম আরও ম্যানপাওয়ার আছে, যেগুলো আমরা কাজে লাগাইতে ব্যর্থ। আমাদের সঠিক লোককে সঠিক জায়গায় কাজে আমরা দিতে পারি না।’

ডা. ধনদেব চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘আসলে কী বলব, স্বাস্থ্যসেবাটা পুরাটাই একটা উদ্ভট উটের পিঠে চলতেছে। এ রকম মনে হয় আমার কাছে। হ্যাঁ, আমি সাবসেন্টার থেকে এ পর্যন্ত উঠে আসছি। সাবসেন্টারে দেখি যেকোনো ওষুধপত্র চুরি হয়ে যায়। সব জায়গায় দুর্নীতি, এসব চিন্তাভাবনা করে আমার আসলে কাজ করার আর মানসিকতাই নরই। আমি সাসপেনশন চাই। আমি সরকারি চাকরি করতে চাই না।’

কেন পদোন্নতি পাননি ধনদেব বর্মণ?

ঘটনার পর অনুসন্ধানে জানা গেছে, পদোন্নতির নিয়ম মানেননি বলেই ডা. ধনদেব এত বছর পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, তিনি নিয়মিত বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) জমা দেননি। ফাউন্ডেশন ট্রেনিং সম্পন্ন করেননি। ডিপার্টমেন্টাল পরীক্ষা ও সিনিয়র স্কেল পরীক্ষায় অংশ নেননি। ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন ক্লিনিকে অপারেশন করার সুবিধা পেতে তিনি নিজের পদোন্নতির আবেদনও দীর্ঘদিন করেননি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘ডা. ধনদেব পদোন্নতির কোনো ক্রাইটেরিয়া পূরণ করেননি। তাই আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তিনি পদোন্নতি পাননি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাকে চলতি বছরের ২৯ জুলাই পদোন্নতি দিলে তিনি সহকারী অধ্যাপক হন।’

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্ক: শোকজের জবাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন চিকিৎসক ধনদেব

বাবার জানাজায় এসে ছেলের মৃত্যু, একসঙ্গে দাফন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষকনেতার

ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ফাঁস, উপসহকারী প্রকৌশলীকে বদলি

জামালপুর-২: বিএনপির দলীয় প্রার্থীর পাশে নেই মনোনয়নবঞ্চিতরা

ময়মনসিংহের ১১ আসন: বিএনপির দ্বন্দ্বে সুবিধায় জামায়াত

বাকৃবিতে শুরু দুই দিনব্যাপী বিএসপিএসটির জাতীয় সম্মেলন

উন্নয়ন প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার আহ্বান

বন্ধুকে খুন করে রক্তমাখা কুড়াল হাতে থানায় হাজির যুবক