জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডের ‘মূল হোতা’ সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু এখন কোথায়, এমন প্রশ্ন জেলাজুড়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নাদিমের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বাবুর বাড়িতে তালা, বাড়ির অন্য সদস্যদেরও হদিস নেই। কেউ কেউ সন্দেহ করছেন, তিনি সপরিবারে ভারতে পালিয়েছেন কি না।
প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যমতে, গত বুধবার রাতে বকশীগঞ্জে সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলায় মাহমুদুল আলম বাবু ও তাঁর ছেলে রিফাত নেতৃত্ব দিয়েছেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও গতকাল থেকে বন্ধ। তিনি কোথায় আছেন কেউ জানেন না।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেছেন, বকশীগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অভিযান চালিয়েও তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তাঁকে আটক করতে বকশীগঞ্জ থানার পুলিশসহ পাঁচটি দল মাঠে নেমেছে।
এদিকে এলাকাবাসী বলছেন, গতকাল দুপুরের পর থেকেই বাবু চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। বাসায় স্ত্রী-সন্তানেরাও নেই। পরিবারের অন্যদের ফোনও বন্ধ রয়েছে। গ্রামের অনেকের কৌতূহল, তাহলে কি সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে তিনি ওপারে চলে গেছেন?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানান, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মুখলেছুর রহমান পান্নার ভাই হিসেবে পুলিশ বিভাগে মাহমুদুল আলম বাবুর পরিচিতি রয়েছে। এই পরিচয় দিয়ে পুরো বকশীগঞ্জে প্রভাব বিস্তার করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন তিনি। টাকা আর ক্ষমতার দাপটে তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং দুবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এলাকাবাসী আরও জানান, মাহমুদুল আলম বাবু গোপনে আরেকটি বিয়ে করেন। সেই ঘরে একটি মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। দ্বিতীয় স্ত্রীর দাবি নিয়ে তাঁর বাড়িতে উঠলে সেই স্ত্রীকে তালাক দেওয়া হয়। এই ঘটনায় দ্বিতীয় স্ত্রী সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেই সংবাদ প্রকাশের জের ধরেই নাদিম হামলার শিকার হন।