কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার অফিসে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়েছে দুদক। গতকাল বুধবার বিকেল থেকে এই অভিযান শুরু হয়। এ সময় অবৈধভাবে আদায় করা ৩ লাখ ১ হাজার ২০০ টাকাসহ প্রধান অফিস সহকারী জান্নাতুল আক্তার মুন্নিকে (৪৯) আটক করা হয়।
জানা যায়, দুদকের কুষ্টিয়া অফিসের সহকারী পরিচালক নীল কমল পালের নেতৃত্বে গতকাল বিকেল ৫টায় দৌলতপুর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার অফিসে অভিযান চালানো হয়। এর আগে দিনভর দুদক টিমের সদস্যরা সাদা পোশাকে অফিসটির সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। অফিস টাইম শেষ হওয়ার পর ঠিক বিকেল ৫টা থেকে অভিযান শুরু করা হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত চলা টানা পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী দুদকের এই অভিযানের সময় সাবরেজিস্ট্রার অফিসের প্রধান গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভেতরে সাবরেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহ ও প্রধান অফিস সহকারী জান্নাতুল আক্তার মুন্নিসহ অফিসের অন্য কর্মচারীদের দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের কর্মকর্তারা। পরে প্রধান অফিস সহকারী জান্নাতুল আক্তার মুন্নিকে আটক করে দুদক।
দুদক সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার অফিসে জমির দলিলের নকল প্রদানে ঘুষ দাবিসহ জমি রেজিস্ট্রিতে সরকারি খরচের চেয়ে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক নীল কমল পালের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে সাবরেজিস্ট্রার অফিসের প্রধান অফিস সহকারী জান্নাতুল আক্তার মুন্নির ড্রয়ার থেকে ৩ লাখ ১ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় এই টাকার উৎস সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা বা রেকর্ডপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন মুন্নি।
সাবরেজিস্ট্রার হিসেবে এখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন সুব্রত কুমার সিংহ। তাঁর মূল পোস্টিং কুষ্টিয়া সদর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে। তাঁর বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা যায়। সাবরেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহকে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের কর্মকর্তারা। পরে প্রধান অফিস সহকারী জান্নাতুল আক্তার মুন্নিকে আটক করে রাতেই দৌলতপুর থানায় সোপর্দ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দুদকের কুষ্টিয়ার উপপরিচালক মো. জাকারিয়া বলেন, অফিস সহকারী জান্নাতুল আক্তার মুন্নিকে প্রধান আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে অফিসটির দুর্নীতিসংশ্লিষ্ট অন্যদেরও মামলার আসামি করা হতে পারে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে দুদকের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।