'আমার মৃত্যুর জন্য দুই ব্যক্তি দায়ী। তাহাদের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দেওয়া হইল, ভেড়ামারা কাস্টমস অফিসের পাশে বামন পাড়ার মৃত ছবেদ মেম্বারের ছেলে আ. ছালাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের বাবুপুরের মনিরুজ্জামান মনির। আ. ছামাদ ও মনির আমার সঙ্গে পাথরের ব্যবসার পার্টনার ছিল। আ. ছামাদের কাছে আমার ৩০ লক্ষ টাকার ওপরে পাওনা আছে। এই টাকা না দেওয়ার জন্য মনির ও ছালাম এক হয়ে আমার বিপক্ষে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এই ষড়যন্ত্রের কারণে অধৈর্য হয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নিলাম।'
এই সুইসাইড নোটে আ. ছামাদ ও মনিরের ফোন নম্বরও রয়েছে। নিচে রয়েছে সিরাজুল ইসলামের নামের স্বাক্ষর (৮ ডিসেম্বর) তারিখ। আজ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া পাথর ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামের (৫৮) মরদেহের পকেটে এ নোট পাওয়া গেছে। আজ শহরের নওদাপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় এ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ, স্থানীয় ও পরিবারসূত্রে জানা গেছে, নিহত পাথর ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম ভেড়ামারা শহরের নওদাপাড়ার (প্রাক্তন সজনী সিনেমা হল) পেছনে মৃত নবী শেখ ফোরম্যানের মেজো ছেলে। আগে তাঁদের লোহার ওয়ার্কশপের দোকান ছিল। সে ব্যবসা ছেড়ে পাথরের ব্যবসা শুরু করেন সিরাজুল। গতকাল সকালে তাঁর ঘরের আড়ার সঙ্গে কাপড়ে ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে তিনটি চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত সিরাজুল ইসলামের ছোট ভাই রসিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেজো ভাই ভেড়ামারার আ. ছালাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মনিরের সঙ্গে পার্টনারে পাথরের ব্যবসা করতেন। তিনি চিঠিতে মৃত্যুর কারণ লিখে গেছেন। যে দুজনকে তিনি অভিযুক্ত করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’ ভাইয়ের মরদেহের বুকপকেটে একটি, বিছানার ওপর ও নিচ থেকে আরও দুটি মিলে মোট তিনটি একই লেখার চিরকুট পাওয়ার কোথাও তিনি উল্লেখ করেন।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মজিবুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ সময় তাঁর লিখে যাওয়া চিরকুট জব্দ করা হয়েছে। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়াও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।