দেড় বছরের বেশি সময় পর অবশেষে আজ মাঠে গড়াচ্ছে নারী ফুটবল লিগ। কমলাপুর স্টেডিয়ামে প্রথম দিন রয়েছে দুটি ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে বেলা সাড়ে ৩টায় আর্মি স্পোর্টস ক্লাবের মুখোমুখি হবে পুলিশ ফুটবল ক্লাব। দ্বিতীয় ম্যাচে সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় বিকেএসপির বিপক্ষে খেলবে গতবারের চ্যাম্পিয়ন নাসরিন স্পোর্টস একাডেমি।
এবারই প্রথম লিগ হচ্ছে ১১ দল নিয়ে। নতুন রাজশাহী স্টার্সের ওপরই নজর সবার। ঋতুপর্ণা চাকমা, আফঈদা খন্দকার, রুপনা চাকমাদের নিয়ে তারকাবহুল দল গড়েছে তারা। শিরোপা লড়াইয়ে তাদের টেক্কা দিতে ভালো দল গড়েছে ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবও। মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমা, দুই শামসুন্নাহার, তহুরা খাতুনকে ভিড়িয়েছে তারা।
সাবিনা খাতুন, মাসুরা পারভীন, কৃষ্ণা রানীরা নেই লিগে। থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের হয়ে সাফ ফুটসাল খেলবেন তাঁরা। অন্যদের মধ্যে সানজিদা আক্তার ও সাগরিকা খেলবেন পুলিশের হয়ে। বেশির ভাগ ক্লাবই একাডেমির ফুটবলারদের নিয়ে দল গড়েছে। প্রশ্ন উঠছে, এশিয়ান কাপে যাওয়ার আগে লিগ কতটা কাজে দেবে ফুটবলারদের।
ভুটানের লিগে ঋতুপর্ণাদের খেলা নিয়ে সব সময় সমালোচনা করে আসছেন বাংলাদেশ নারী দলের কোচ পিটার বাটলার। সেই লিগের খুব একটা গুরুত্ব বহন করে না তাঁর কাছে। অথচ বাংলাদেশের লিগের মানও প্রায় একই রকম। শক্তিশালী দল গড়ার সামর্থ্য থাকে শুধু এক-দুটি দলের। রেলিগেশন না থাকায় বাকিদের কাছে অংশগ্রহণই মূল কথা। বাটলারের শিষ্যরা কতটুকু প্রস্তুত রাখতে পারবেন নিজেদের; কতটুকুই-বা পরীক্ষায় ফেলতে পারবেন—এ প্রশ্ন এসেই যাচ্ছে।
ভুটান লিগে খেলা কয়েকজন ফুটবলারের ফিটনেসে ঘাটতি চোখে পড়েছিল সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ড ম্যাচে। মার্চে এশিয়ান কাপের মাত্র এক মাস আগে ঘরোয়া লিগ শেষ হবে। ফলে ফিটনেস-পারফরম্যান্স অনেক কিছুই শঙ্কার মধ্যে।
ভুটানের লিগ নিয়ে প্রশ্ন তোলা বাটলার কদিন আগে অনুষ্ঠিত সাফ ক্লাব কাপে নাসরিন একাডেমির তারকা ফুটবলারদের ছাড়েননি। তখন তাঁর যুক্তি ছিল, অন্য কোচের অধীনে খেলতে পারবেন না ঋতুপর্ণা-আফঈদারা। অথচ ঘরোয়া লিগে ঠিকই ছেড়েছেন। বাফুফে নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ গতকাল বলেন, ‘এখন এলে পিটারকে জিজ্ঞেস করব। অন্য কোচের অধীনে এখন গেল, আগে দেওয়া হয়নি কেন?’
ভুটানের ক্লাবগুলোর আলাদা ভেন্যু থাকলেও বাংলাদেশের লিগ হবে এক ভেন্যুতেই। ম্যাচগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে বিশ্বাস কিরণের, ‘লিগটা মূলত করা হয়েছে এশিয়ান কাপ সামনে রেখে। যেহেতু এই সময়টায় ফিফা উইন্ডো নেই, অনুশীলন নেই, মেয়েরা যাতে ম্যাচের ভেতরে থাকে, সে কারণেই লিগটা করা হচ্ছে। আমার বিশ্বাস, ম্যাচ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। যে উদ্দেশ্যে লিগের এমন কম্বিনেশন করেছি, সেটা সফল হবে।’
দলবদলই শেষ হয়েছে পরশু। আজ শুরু হচ্ছে মাঠের খেলা। টানা সূচির কারণে ক্লাবগুলো পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সময় পায়নি। এবার পুলিশের কোচ হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ওয়ালী ফয়সাল। প্রস্তুতির ঘাটতি নিয়ে মোটেও বিচলিত নন তিনি, ‘এখানে অনেকে অভ্যস্ত। এতটুকু বলতে পারি, আমার ফুটবল ক্যারিয়ারে কখনোই চাপ নিয়ে খেলতাম না। যেকোনো কাজে সবাইকে সব সময় প্রস্তুত থাকতে হয়। আমরা ফুটবলাররাও তা-ই।’