রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় চার বন্ধু সাইফুল ইসলাম, কচি, রিপন ও সুমন এক সঙ্গে যুবলীগের রাজনীতি শুরু করেন। সাইফুল দলীয় পর্যায়ে ২ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। কিন্তু রিপন ও সুমন কোনো পদ পাননি। এ নিয়ে তাঁদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। ঈর্ষা থেকেই বন্ধুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন পদবঞ্চিত বন্ধুরা। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ মে সাইফুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেন তাঁরা। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার কুমিল্লা জেলার বরুড়া এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ।
পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার মনিরুজ্জামান সুমন ও ইমনের দেওয়া তথ্যমতে রাজধানীর খিলগাঁও থানার ত্রিমোহনী এলাকা থেকে দুটি পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার।
ঘটনার বর্ণনায় তিনি জানান, গত ১৫ মে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে একটি পোশাকের শোরুমের সামনে রাস্তায় মনিরুজ্জামান সুমন ও তাঁর সহযোগীরা সাইফুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন। গুলিবিদ্ধ সাইফুল নিজেই একটি সিএনজিতে উঠে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। ঘটনার একদিন পর ভুক্তভোগীর স্ত্রী সবুজবাগ থানায় নয়জনের নাম উল্লেখকরে অজ্ঞাতনামা ৩ / ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলায় করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, বন্ধুত্ব ভেঙে যাওয়ার পর তাঁরা পৃথক গ্রুপ তৈরি করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতে থাকেন। কয়েক বছর আগে রিপন গ্রুপের সদস্য বাশারকে হত্যার ঘটনায় মামলার এক নম্বর আসামি ছিলেন ভুক্তভোগী এই সাইফুল। সাইফুল এই মামলায় দীর্ঘদিন জেলে থাকার কারণে সুমন গ্রুপ এলাকায় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে।
এর মধ্যে সাইফুল জেল থেকে জামিনে মুক্ত হয়। এলাকার নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা থেকে সুমন গ্রুপ ও রিপন গ্রুপ একত্রিত হয়ে সাইফুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটনায় দিন রিপন, কচি, সুমন ও ইমনসহ ১২ / ১৩ জন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। রিপন সাইফুলকে গুলি করে। তাঁদের বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে।