দুই কিশোরীকে দিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার চীনা নাগরিক জাং জোন পেই (৫২), তাঁর গাড়িচালক শিপন মিয়া (২৮) ও দোভাষী সিলভীয়া আফরিন ওরফে সিলভীকে (২৮) কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিকেলে এই তিনজনকে তুরাগ থানায় দায়ের করা মানব পাচার আইনের মামলায় আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রত্যেককে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমনের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় কর্মরত সারোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরের রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের কর্ণফুলী ভবনের ১৩০৪ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে শনিবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় চীনা নাগরিকসহ তিনজনকে আটক করা হয়। এ সময় ওই অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বাংলাদেশি দুই অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।
পরে ভুক্তভোগী কিশোরীদের অভিভাবককে খবর দেওয়ার পর তাঁরা মধ্যরাতে থানায় এসে মানব পাচার আইনে মামলা করলে ওই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জানা গেছে, দুই কিশোরীর একজনের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় তিনি বলেছেন, বীথি নামের একজন দুই কিশোরীকে কাজের কথা বলে উত্তরা ওই অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে আসেন। বীথি চীনা নাগরিকের কাছে দুজনকে দিয়ে যান। কিন্তু চীনা নাগরিক এবং তাঁর গাড়িচালক ও সিলভী নামের মহিলা দুই কিশোরীকে অসামাজিক কার্যকলাপে বাধ্য করেন।
গতকাল শনিবার এই দুজনকে গাড়িতে করে অ্যাপার্টমেন্টে নেওয়ার সময় নিরাপত্তারক্ষীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা মালিককে খবর দেন। মালিক এসে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন চীনা নাগরিক তাঁর বাসায় কিশোরীদের দিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করান। পরে তিনি লোকজনের সহায়তায় তাঁদের আটক রেখে পুলিশে সোপর্দ করেন।
দুই কিশোরী প্রায় দুই মাস ধরে ওই অ্যাপার্টমেন্টে ছিল। সেখানে বিভিন্ন ধরনের পুরুষ লোক এনে কিশোরীদের খারাপ কাজ করাতেন বলেও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের রিমান্ডের আবেদন না করায় তাঁদের আদালতের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়নি। তাঁদের কোর্ট হাজতখানায় রাখা হয়েছিল। সেখান থেকেই তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে আসামিদের পাশাপাশি দুই কিশোরীকেও আদালতে হাজির করা হয়। তাদের অভিভাবকেরাও আদালতে হাজির হন এবং জিম্মায় নেওয়ার আবেদন করেন। একই আদালত দুই কিশোরীকে তাদের বাবার জিম্মায় দেন।