গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদকবাহী, সড়ক দুর্ঘটনা, চোরাই মালামাল বহনকারী পিকআপ ভ্যানসহ নানা অপরাধে থানা-পুলিশের জব্দকৃত হাজার হাজার গাড়ি বছরের পর বছর ধরে আইনি জটিলতায় পড়ে আছে। দীর্ঘ সময় ধরে গাড়িগুলো অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকায় সেগুলোতে ধরেছে মরিচা। অনেক সময় দীর্ঘ আইনি জটিলতা কাটিয়ে মালিক গাড়ি ফেরত পেলেও তার যন্ত্রাংশ ঠিক থাকে না।
জানা গেছে, গাজীপুরের শ্রীপুর থানা ও হাইওয়ে থানায় বিভিন্ন ঘটনায় শত শত গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। কিন্তু থানা দুটিতে নির্দিষ্ট ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা নেই। তাই থানা চত্বরে অলিখিত ডাম্পিং স্টেশনে জব্দকৃত গাড়িগুলো রাখা হয়েছে। মাওনা হাইওয়ে থানায় নির্দিষ্ট ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর সারি করে রাখা হচ্ছে বিভিন্ন পরিবহন। শ্রীপুর থানা চত্বরে রাখা আছে সারি সারি মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন যানবাহন। হাইওয়ে পুলিশের জব্দকৃত গাড়িগুলো মহাসড়কের ওপর রাখার কারণে মাঝেমধ্যেই দেখা দেয় জনভোগান্তি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রীপুর থানা চত্বরে বিশাল একটি জায়গা নিয়ে এলোপাতাড়িভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা, চোরাই মালামাল বহনসহ বিভিন্ন মামলায় জব্দ করা ট্রাক, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, ডাম্পট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি। কোনো কোনো গাড়ি একেবারে মরিচায় ঢেকে রয়েছে। জব্দকৃত মোটরসাইকেলগুলোর ওপরে মরিচার আস্তর পড়ে আছে। সাদা রঙের প্রাইভেট গাড়িগুলোর রং ফেকাসে হয়ে রয়েছে। সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলোতেও মরিচা ধরছে। অনেক গাড়িতে মরিচা ধরতে ধরতে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, অযত্ন-অবহেলায় এসব গাড়ির এখন জীর্ণশীর্ণ অবস্থা। যত দিন যায়, ততই কমতে থাকে এসব গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রপাতির সংখ্যা।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, জব্দকৃত এসব যানবাহন এভাবে রাখার কারণে থানার সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘ আইনি জটিলতা কাটিয়ে উঠতে বছরের বছর চলে যায়। এরপর সংশ্লিষ্ট গাড়ির মালিক আইনি জটিলতা কাটিয়ে এলেও তত দিনে গাড়িগুলোর কোনো যন্ত্রাংশ সচল থাকে না। তাই তাঁরা গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে আগ্রহ দেখান না।
ওসি আরও বলেন, থানায় জব্দকৃত গাড়িগুলো মূলত প্রতিটিই মাদকসহ অবৈধ মালামাল বহন, দুর্ঘটনার কারণে কিংবা অন্য কোনো মামলায় জব্দ করা হয়েছে। বছরের পর বছর থানা চত্বরে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকায় এসব বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল ব্যবহারের উপযোগিতা হারাচ্ছে।