নাসির উদ্দিন ফকির (৩৭)। বেশভূষা ও উচ্চতা দেখলে মনে হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। কোমরে থাকে ওয়াকিটকি, মানিব্যাগে পুলিশের পোশাক পরা ছবি। কিন্তু তিনি আসলে পুলিশ নন; পেশায় একজন পোশাকশ্রমিক। দীর্ঘদিন সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিলেন তিনি।
পরে রাজধানীর উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের হাউজবিল্ডিং এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে নাসির উদ্দিন ফকিরকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া নাসির গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার আরোয়াকান্দি গ্রামের জব্বার চুন্নু ফকিরের ছেলে। বর্তমানে তিনি আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।
এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাইনুল ইসলাম নামের একজন ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট বিকেলে এটিএম বুথে টাকা তুলতে গেলে তাঁর গতি রোধ করেন নাসির। প্রথমে পরিচয় জানতে চান, এরপর তাঁর ব্যাগ নিয়ে অযথা তল্লাশি শুরু করেন। ওই সময় টহল পুলিশের একটি দল সেখানে উপস্থিত হলে মাইনুল তাঁদের সব খুলে বলেন। এরপর টহল পুলিশ নাসিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি একপর্যায়ে নিজেকে ভুয়া পুলিশ বলে স্বীকার করেন।’
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ওসি মহসীন বলেন, ‘নাসির একজন গার্মেন্টস শ্রমিক। কিন্তু তিনি পুলিশ পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছিলেন। তাঁর পকেটে পুলিশের ইউনিফর্ম পরা ছবি এবং কোমরে ওয়াকিটকি থাকত। নিজেকে পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে পরিচয় দিতেন।’
ওসি মহসীন বলেন, ‘আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানায় রাতে ডিউটি করেন নাসির। সারা দিন কাজ না থাকায় দিনে তিনি পুলিশ সেজে ঘুরে বেড়ান। এ ছাড়া চুলও রাখেন ছোট ছোট। যাতে দেখে তাঁকে পুলিশ মনে হয়। কোমরে ওয়াকিটকি নিয়ে পুলিশের এই বেশ ধরে তিনি ঘুরে বেড়ান। এরপর সহজ-সরল কাউকে পেলে নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে তল্লাশি করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতেন। এমন কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আগেও মিরপুরে গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি।’
এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।