জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলায় কৃষকদের প্রায় ৭৫০ একর জমি দখল করে সেখানে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প চালুর অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা। কৃষকদের দাবি, প্রভাবশালী একটি মহল কৃষকদের জমি দখল করে প্রভাব খাটিয়ে বগুড়া জেলার ধরাবর্ষা মৌজার একাংশ জামালপুর জেলার সঙ্গে যুক্ত করে কাইজার চর নামে ভুয়া মৌজা তৈরি করে খাস খতিয়ানে এনে প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি আয়োজিত মানববন্ধনে এসব অভিযোগ জানিয়েছেন বক্তারা। মানববন্ধনে মাদারগঞ্জ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল ও নদী সিকস্তি অঞ্চলে ডিএস, সিএস, এসএ রেকর্ড এবং চিটার ভলিউম দেখে প্রজাস্বত্ব বহাল ও খাজনা-খারিজ চালুসহ ৭ দফা দাবি তোলা হয়।
মানববন্ধনে কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘ভূমি অফিস জেগে ওঠা চরে পূর্বতন মালিক বা তাঁর উত্তরাধিকারীকে জমি খারিজ দেয় না। বিগত সময়ে বিভিন্ন জরিপে নিজ নামে জমিজমা রেকর্ড করা সত্ত্বেও ভূমি অফিস খাজনা না নেওয়ায় এসব অঞ্চলের মানুষ জমিজমা ক্রয়-বিক্রয় এবং সেই জমির অধিকার ভোগ করতে পারছে না।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আক্কাস বলেন, ‘স্থানীয় কৃষকেরা তাঁদের জমির প্রজাস্বত্ব ফিরে পেতে উচ্চ আদালতে মামলা করায় স্বার্থান্বেষী মহলটি ক্ষিপ্ত হয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁদের জেল-হাজতে পাঠাচ্ছে, রিমান্ডে দিচ্ছে।’
সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক জাহিদ হোসেন খান মানববন্ধনে মাদারগঞ্জে তিন ফসলি জমিতে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করে অন্যত্র স্থানান্তর করা, কৃষকদের জমি হরণের চেষ্টা বন্ধ করা, আন্দোলনকারীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি, বিনা ক্ষতিপূরণে কৃষকের জমিতে কোনো প্রকল্প না নেওয়া, অবিলম্বে ভূমি আইন, ২০২২ পাস, নদীভাঙন রোধে ও জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণসহ নানান দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘নদী সিকস্তি অঞ্চলের মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইসংগ্রামে নামতে হয়েছে। এই ন্যায়সংগত দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত উদ্যোগ নিন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’
কৃষক নেতা আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন কবি ও সুরকার আলতাফ হোসেন মাস্টার, গোলাম ফারুক প্রমুখ।