রাজধানীর যাত্রাবাড়ী রায়েরবাগে সমিতির ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সমিতির কর্মীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা ও অপমানের কারণে এক গৃহবধূ আত্মহত্যার করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ লতিফ ভূঁইয়া কলেজ সংলগ্ন একটি বাড়ির নিচ তলার ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে। অচেতন অবস্থায় গৃহবধূকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত ৮টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাশিদা আক্তার ডলি (৩৮) নামে ওই গৃহবধূ বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার মিজানুল ইসলামের স্ত্রী। স্বামী ও দুই ছেলেকে নিয়ে রায়েরবাগের ওই বাসায় থাকতেন।
ডলির স্বামী মিজানুল ইসলাম বলেন, তিনি কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি মার্কেটের একটি দোকানে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করেন। ছয় মাস আগে স্ত্রী ডলি জামিনদার হয়ে স্থানীয় আল-ফালাহ কো-অপারেটিভ নামে একটি সমিতি থেকে বাবা আব্দুর রাজ্জাককে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে দেন। সেই টাকা দিয়ে আব্দুর রাজ্জাক তাঁর আগের বিভিন্ন ঋণ শোধ করেন এবং বাকি টাকা খরচ করে ফেলেন।
মিজানুল আরও বলেন, প্রতি মাসে সমিতির কর্মী মিজানুলের বাসায় এসে ২৭ হাজার টাকা নিয়ে যেতেন। আজ সকালেও সমিতির কর্মীরা বাসায় টাকার জন্য আসেন। কিন্তু ডলির বাবা কিস্তির টাকা জোগাড় করতে পারেননি। এই নিয়ে সমিতির কর্মী ডলি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে রাগারাগি করেন। আজকেই ২০ হাজার টাকা দিতে হবে, না দিলে মামলা করবেন বলেও হুমকি দেন এবং অপমানসূচক কথা বলেন। পরে ওই কর্মী চলে যান।
সকাল ১০টার দিকে কাজে চলে যান মিজানুল। সন্ধ্যার দিকে তাঁকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছেন ডলি। তাঁদের ছেলে ডলিকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আল-ফালাহ কো-অপারেটিভ সমিতির কর্মী বিউটির নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া গৃহবধূর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।