গাজীপুরে ছিনতাইকারীদের হাতে ফল ব্যবসায়ী মোমেন শেখ (৫০) নিহতের ঘটনায় জড়িত মূল হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান ও গাজীপুরের পুবাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাঁদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দুটি লোহার রড, একটি লোহার ধারালো ছেনি, একটি লাঠি, একটি পিকআপ ও আসামিদের ছয়টি মোবাইল ও নিহতের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা আরজু মিয়া (৩৪), মো. সোহান (১৮), নবী হোসেন (২৯), মো. রাজীব মিয়া (২১) ও মো. শাকিল আহম্মেদ (১৮)।
আজ রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মোশতাক আহমেদ।
মোশতাক আহমেদ বলেন, ১৪ জুলাই ভোরে নিহত ফল ব্যবসায়ী মোমেন শেখ ফল কেনার জন্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকার উদ্দেশে রওনা করেন। পরবর্তীকালে গাজীপুর জেলার হাড়িনাল হানকাটা ব্রিজের ওপর পৌঁছালে অজ্ঞাত পিকআপে পাঁচ-ছয়জন ছিনতাইকারী অটোরিকশার গতিরোধ করে নিহত মোমেন শেখের কাছে থাকা ফল কেনার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ব্যবসায়ী মোমেন শেখ বাধা দিলে ছিনতাইকারীদের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে মোমেন শেখের বুকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন ছিনতাইকারীরা। মোমেন শেখ ঘটনাস্থলে মারা গেলে ছিনতাইকারীরা টাকাপয়সা ও মোবাইল ফোন নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
ওই ঘটনায় মোমেন শেখের স্ত্রী মোছা. সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) গাজীপুর সদর থানায় অজ্ঞাতনামা তিন-চারজনকে আসামি করে একটি ছিনতাইসহ হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঘটনায় জড়িতদের ধরতে র্যাব-১-এর আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামি গ্রেপ্তারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা মোমেন শেখকে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং এই চাঞ্চল্যকর হত্যার লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেন।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা জানান, তাঁরা পেশাদার ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য। তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করে থাকেন। এ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা আরজু মিয়ার ভাষ্যমতে, তাঁরা আগের মতো ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ১৪ জুলাই ভোরে বাসা থেকে বের হয়ে অবস্থান নেন। এ সময় মোমেন শেখের অটোরিকশাটিকে দেখে তাঁরা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। আসামি আরজু মিয়ার নামে একটি এবং নবী হোসেনের নামে চারটি ডাকাতি ও চুরির মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।