ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর অঙ্গীকার করেছে সংগঠনটির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। এ লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ‘শহীদি শপথ’ নেন তাঁরা। রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই শপথ পড়ান ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের।
শপথবাক্যে বলা হয়, ‘শহীদ ওসমান হাদির রক্তের শপথ, এই রক্ত বৃথা যেতে দেব না। যে হাত তাঁকে হত্যা করেছে, যে শক্তি এই হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে রয়েছে, যে আধিপত্য এই দেশকে দাস বানাতে চায়, তার বিরুদ্ধে আমরা শেষনিশ্বাস পর্যন্ত লড়ে যাব। এই বাংলার জমিনে যে আধিপত্যবাদ জেঁকে বসেছে, তা সমূলে উৎপাটন করব। ভয়, লোভ আর আপসের রাজনীতি আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। কোনো ভয় ও লোভ আমাদের এই লড়াই থেকে পিছপা হতে দেব না।’
আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করে শপথে বলা হয়, ‘শহীদ ওসমান হাদির হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত, ইনসাফ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য, ইনসাফ কায়েমের জন্য, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সংগ্রাম চলছে, আমাদের সংগ্রাম চলবে।’
এ সময় আব্দুল্লাহ আল জাবের জানান, ওসমান হাদি সহিংসতা চাইতেন না। সদ্যপ্রয়াত এই নেতার আদর্শ মেনে ইনকিলাব মঞ্চও সহিংসতা চায় না।
তিনি বলেন, ‘তাঁর (হাদির) জানাজায় ১৫ লাখ মানুষ অংশ নেন। আমরা বলতে পারতাম, শহীদের রক্তের বদলা না নিয়ে ঢাকা ছাড়া যাবে না। আমরা তা বলিনি। কারণ, আমরা সহিংসতা চাইনি।’
শপথ পাঠের সময় উপস্থিত ছিলেন ওসমান হাদির বড় ভাই ওমর বিন হাদি, ইনকিলাব মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখপাত্র ও ডাকসু নেত্রী ফাতিমা তাসনিম জুমা প্রমুখ।
আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে হাদির হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তাঁরা।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। তিন দিন পর ১৮ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।