হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহিরাঙ্গন এলাকা থেকে ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস ও অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করেছে এয়ারপোর্ট (১৩) আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। এসব ডিভাইস সাধারণত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা ও ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কাজে ব্যবহার করা হয়।
এ ঘটনায় শাহারুন আলী (৩৮) ও মো. ইকবাল হোসেন জীবন (৩৫) নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে শাহরুন ও ইকবালকে প্রথমে আটক করে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে তাঁদের কাছে থেকে ৭৬টি ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস, ৫০টি ইয়ারপিস, ৩টি ল্যাপটপ এবং ৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শাহারুন আলী সাধারণ যাত্রীবেশে চীন থেকে এই ডিভাইসগুলো এনেছেন। বিমানবন্দরে আগে থেকে অপেক্ষায় ছিলেন চক্রের আরেক সদস্য মো. ইকবাল হোসেন জীবন। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শাহরুন। এ সময় তাঁদের আটক করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই স্পাই ডিভাইসগুলো বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা ও ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত হয়। এতে থাকে ক্রেডিট কার্ড সদৃশ ডিভাইস, প্রায় অদৃশ্য ইয়ারপিস এবং স্বচ্ছ এক্সট্রাকশন থ্রেড। মূল ডিভাইসটি দেখতে ক্রেডিট কার্ডের মতো হওয়ায় এগুলো সহজে শনাক্ত করা যায় না। এই স্পাই ডিভাইসগুলো সিমের মাধ্যমে যুক্ত করে অসাধু পরীক্ষার্থীরা নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষার হলে নিয়ে যায়। অন্যপ্রান্তে যুক্ত থাকে প্রশ্নপত্র জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। ক্রেডিট কার্ড সদৃশ ডিভাইসটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনকামিং কল রিসিভ করে। ইয়ারপিসটি কানের ভেতরে রাখা হয়, বাইরে থেকে কিছুই বোঝা যায় না। এর মাধ্যমে পরীক্ষার হলের বাইরে থাকা অসাধু চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরীক্ষা শেষে অসাধু পরীক্ষার্থীরা স্বচ্ছ এক্সট্রাকশন থ্রেডের মাধ্যমে ইয়ারপিসটি নিরাপদে বের করে আনে।
পাচার চক্রের এই দুজনের বিরুদ্ধে আজ বিমানবন্দর থানায় (১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন এর ২৫ বি এর ১ (বি) / ২৫-ডি ধারা) মামলা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট (১৩) আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অপারেশনাল কমান্ডার পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মোজাম্মেল হক বলেন, স্পাই ডিভাইসগুলো আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য। এর আগে জালিয়াতির কাজে অসাধু ব্যক্তিরা নিয়োগ পরীক্ষা ও ভর্তি পরীক্ষায় ব্যবহার করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।