ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে গ্রেপ্তার মো. আব্দুল হান্নানকে জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান শাহাদাত তাঁকে জামিন দেন।
ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
১২ ডিসেম্বর হাদিকে গুলি করার পর ১৩ ডিসেম্বর মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে আব্দুল হান্নানকে আটক করে র্যাব-২। পরবর্তী তাঁকে পল্টন মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর তাঁকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। তিন দিনের ডিমান্ড শেষে ১৭ ডিসেম্বর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আব্দুল হান্নানের আইনজীবী তখন আদালতের কাছে নিবেদন করেন যে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ওই মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নান নন। আদালত তদন্ত কর্মকর্তার কাছে তখন প্রতিবেদন চান।
তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ প্রতিবেদন দাখিল করে জানান, রিমান্ডকালে আব্দুল হান্নানকে শোরুম মালিকের মুখোমুখি করা হয় এবং বিআরটিএ থেকে তাঁর নামে নিবন্ধিত দুটি মোটরসাইকেলের তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি সুজুকি জিক্সার ও অন্যটি ইয়ামাহা। তবে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি হোন্ডা হর্নেট মডেলের। হান্নানের মোটরসাইকেলের নম্বর ঢাকা মেট্রো-ল ৫৪-৬৩৭৫, যা সুজুকি জিক্সার। হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বরের সঙ্গে এক অঙ্কের অমিল রয়েছে। ওই মোটরসাইকেলের শেষ সংখ্যা ৬, আর হান্নানের মোটরসাইকেলের শেষ সংখ্যা ৫ শনাক্ত হয়েছে। অর্থাৎ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল আব্দুল হান্নানের নয়।
উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে নির্বাচনী প্রচারণার সময় গুলিবিদ্ধ হন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাঁকে। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার মারা যান তিনি। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর মরদেহ বাংলাদেশে আসে। সেদিন হাদির মরদেহ জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়। গতকাল জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।