জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দুই শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করেছেন ক্যাম্পাস সংলগ্ন আরামবাগ হোটেল মালিকের ছেলে। পরে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে মালিকের দুই ছেলেকে মারধর করে। এ ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আরামবাগ হোটেল ও নগর সিদ্দিক প্লাজা মার্কেট বন্ধ করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুর ২টার দিকে ২০১৫-১৬ বর্ষের শিক্ষার্থী আল-সাদিক ও সাগর আরামবাগ হোটেলে খেতে যান। সেখানে বসা নিয়ে দুই লোকের সঙ্গে তাঁদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপর আল-সাদিক হাত ধুতে গেলে তাঁর ওপর কাঁচি নিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে আল সাদিকের মুখের পাশে কেটে যায়। তাঁকে পার্শ্ববর্তী ন্যাশনাল মেডিকেলে নিয়ে গেলে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও (মিটফোর্ড) হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা আরামবাগ হোটেল মালিকের দুই ছেলে ও তাঁর এক সহযোগীকে মারধর করে। তাঁদেরও গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
নগর সিদ্দিক প্লাজা ও আরামবাগের মালিক ফারুক মনোয়ার বলেন, ‘কয়েকজন পোলাপান এসে আমার কিছু পোলাপান বসে ছিল তাঁদের সাথে ঝামেলা করেছে। আমার ভাগ্নিসহ কয়েকজন ইন্ধন দিয়ে এসব করাইছে। যারে মারছে ও আমার বড় ছেলে মোনায়েম। ছোট ছেলে তোফায়েলকেও মারছে। মোনায়েমসহ কয়েকজন বসে ভাত খাইতেছিল, ক্যাম্পাসের পোলাপান এসে থাপ্পড় দিছে। ভিডিও ফুটেজ আছে, সেখানে সব আছে।’
আহত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আল-সাদিক বলেন, ‘আমরা হোটেলে খাইতে যাওয়ার পরে ওই লোক হাঁটার জায়গায় পা বের করে বসে ছিলেন। উনি যেহেতু খাচ্ছিলেন না, তাই আমরা তাকে বলি উঠে আমাদের বসতে দিতে। ওই ব্যক্তি বলে, আমি মালিক, আমি উঠব কেন? তখন কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর আমরা হাত ধুইতে গেলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই লোক কাঁচি দিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করে, যা সিসিটিভি ফুটেজেও আছে। আমার মুখে অনেকখানি কেটেছে, পাঁচটা সেলাইও লেগেছে।’
এ ব্যাপার জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর এমন হামলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ঘটনাটি যেহেতু বাইরের তাই আমি পরামর্শ দিয়েছি মামলা করতে। পরবর্তীতে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে।’
সূত্রাপুর থানার ওসি মো. মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘দোকানের মালিকানা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। সেটাকে কেন্দ্র করে মারামারি হয়েছে বলে একপক্ষ থেকে শুনেছি। আরেক পক্ষ এখনো হাসপাতালে আছে, তারা আসলে তাদের বক্তব্য শুনব। আমাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ আছে, আমরাও সেটি পর্যবেক্ষণ করছি।’