ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু থেকে মাহবুব আলী জাকিকে পাশে পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারের সঙ্গে জাকির সম্পর্কটাও ছিল দারুণ। স্বাভাবিকভাবে তাঁর মৃত্যু একটু বেশিই ছুঁয়ে গেছে মুশফিককে। তাঁর অঝোরে কান্না যেন সেটারই প্রমাণ দেয়।
জাকির মৃত্যুসংবাদ যখন আসে, তখন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকার বিপক্ষে ব্যাট করছে রাজশাহী। ম্যাচ চলায় ক্রিকেটারদের অনুভূতি প্রকাশের সুযোগ ছিল না। কিন্তু ম্যাচ শেষ হতেই ঢাকা ও রাজশাহীর ক্রিকেটাররা নিজেদের আবেগ প্রকাশ করতে শুরু করেন।
অসুস্থ হওয়ার পর জাকিকে মাঠে কিছুক্ষণ সিপিআর দিয়ে সিলেটের আল হারামাইন হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পরই আসে মৃত্যুসংবাদ। এরপর লাশ আনা হয় সিলেট স্টেডিয়ামে। জাকির চলে যাওয়ার দিনে রাজশাহীকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা। দুই দলের ম্যাচ শেষে মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় মুশফিককে। কেঁদেছেন শরিফুল ইসলামসহ অন্য ক্রিকেটাররাও। জাকির সঙ্গে মুশফিকের সম্পর্কটা ২৫ বছরের। অনূর্ধ্ব ১৯ দল, হাই পারফরম্যান্স (এইচপি), একাডেমি থেকে জাতীয় দল—সব জায়গাতেই প্রয়াত এই কোচ ছিলেন মুশফিকের অভিভাবকের মতো। দেশের নামকরা সব ক্রিকেটারের বিপদের দিনে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জাকি। এবার তিনি সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন।
জাকির মৃত্যুতে মাতম চলছে দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। ভিন্ন ভিন্ন বার্তায় শোক প্রকাশ করেছেন সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেনরা। শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এবং ঢাকা ক্যাপিটালস।
রাজশাহীর বিপক্ষে জয় জাকিকে উৎসর্গ করেছে ঢাকা। ম্যাচ শেষে দলটির অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন বলেন, ‘আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টের খবর। জাকি স্যার মারা গেছেন। তাঁর পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা ও দোয়া রইল। তবে একটি ভালো জয়। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটি ক্ষতি। তিনি আমাদের কাছে অনেকটা বাবার মতো ছিলেন। আমি মনে করি, এটি আমাদের জন্য অনেক বড় ক্ষতি। আমরা যখনই কোনো ম্যাচ খেলি, জেতার জন্যই খেলি। এই জয় আমি জাকি স্যারকে উৎসর্গ করছি। ইনশা আল্লাহ, আল্লাহ তাঁকে জান্নাত দান করবেন।’