চট্টগ্রাম: ইস্তিরি ও লোহার পাইপ গরম করে শরীরে ছ্যাঁকা দিয়ে গৃহবধূ নির্যাতন ও মারধরের অভিযোগে স্বামী মুজিবর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্ত্রীকে নির্যাতনের সময় বিনা চিকিৎসায় বাসায় আটকে রাখত স্বামী। এমন বর্বরতার ফলে ওই গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে পচন ধরেছে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা না পেয়ে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ওই গৃহবধূ।
গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের খুলশী থানার ১ নম্বর গলির তামান্না ভবন থেকে ভিকটিম আয়েশা আক্তারকে (২১) উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আয়েশার পিতার অভিযোগ, টানা দুই মাস ধরে তাঁর মেয়েকে ইস্তিরি ও লোহার পাইপ গরম করে শরীরে ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতন করত মুজিবর রহমান। চলত কিল-ঘুষি আর চড়-থাপ্পড়ও। নিয়মিত নির্যাতন করা হলেও তাঁকে বিনা চিকিৎসায় দুই মাস ধরে বাসায় আটকে রাখা হয়েছিল।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শীলব্রত বড়ুয়া জানান, ভিকটিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে চমেক হাসপাতালের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের খুলশী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, আয়েশা আক্তারকে শারীরিকভাবে প্রচণ্ড নির্যাতন করে প্রায় দুই মাস বিনা চিকিৎসায় গৃহবন্দী করে রাখে স্বামী মুজিবর। যৌতুক ও পারিবারিক কলহ থেকে আয়েশাকে নির্যাতন করত মুজিবর। পরিবারের অভিযোগ পেয়ে শনিবার বিকেলে খুলশী থানার ১ নম্বর রোডের সি ব্লকে তামান্না ভবনের নবম তলায় অভিযান চালায় পুলিশ। পরে রাত পৌনে ১০টার দিকে ভিকটিম আয়েশাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই স্বামী মুজিবরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি জানান, আয়েশার পরিবার খুবই গরিব। আয়েশার প্রথম বিয়ে হলেও মুজিবুরের দ্বিতীয় বিয়ে ছিল এটি। মুজিবর পেশায় একজন কন্ট্রাক্টর।
শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘আয়েশার সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। কোথাও ইস্তিরি দিয়ে গরম ছ্যাঁকা দেওয়ার দাগ আর কোথাও গরম লোহার পাইপ দিয়ে নির্যাতনের দাগ আমরা দেখেছি। এ ছাড়া মারধরের চিহ্ন রয়েছে। এই ঘটনায় আয়েশার বাবা নেছার উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।’