ফেনীর দাগনভূঞায় মাতুভূঞা ইউনিয়নের মোমারিজপুর গ্রাম থেকে গত রোববার এক মাদ্রাসা ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, সে সীমান্তবর্তী সোনাগাজী থানার চর মজলিশপুর ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গন্জ মরহুম হাফেজ শামসুল হক (রহ.) খানা মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। নাম আরাফাত হোসেন।
পুলিশের তদন্তে এই ঘটনার পেছনের রোমহর্ষক গল্প উঠে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, শিশু আরাফাতকে তারই সহপাঠী জোহাইর আল ফায়িজ (১১) খুন করেছে। খুনের পর ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন, সহকারী শিক্ষক নুর আলী আরাফাত, আজিম উদ্দিন।
এ ঘটনায় দাগনভূঞা থানায় নিহত ছাত্রের বাবা ফানা উল্লা বাদী হয়ে সোমবার হত্যা মামলা করেছেন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ এই চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, আরাফাত হোসেন ও তার সহপাঠী জোহাইর আল ফায়িজের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকত। গত শনিবার ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ ছাড়া শিক্ষকেরা আরাফাতকে বেশি ভালোবাসতেন। এ নিয়ে জোহাইয়ের মধ্যে ক্ষোভ জমে ছিল। ঈর্ষাকাতর ছিল সে।
গত রোববার রাতে আরাফাতকে সঙ্গে নিয়ে পানি আনার জন্য নিচে নামে জোহাইর। তাকে মাদ্রাসা সংলগ্ন ডোবার সামনে নিয়ে যায় সে। এরপর আরাফাতকে আচমকা ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে চেপে ধরে হত্যা করে। হত্যার পর জোহাইর ঘটনাটি শিক্ষকদের জানায়। তখন প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন, সহকারী শিক্ষক নুর আলী আরাফাত, আজিম উদ্দিন আরাফাতের মৃতদেহ ডোবার মাঝখানে ঠেলে দেন।
পরবর্তীতে পানিতে ডুবে আরাফাত মারা গেছে বলে প্রচার করা হয়। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ প্রাথমিকভাবে সহপাঠী জোহাইর ও তিন শিক্ষককে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে তারা আসল ঘটনা বর্ণনা করেন। সোমবার বিকেলে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।