কুমিল্লার হোমনায় রাতারাতি বড়লোক হতে জাহিদ হাসান নামে এক স্কুলছাত্রকে হত্যা করে মুক্তিপণ দাবি করা তিন বন্ধুর আমৃত্যু কারাদণ্ড আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৪ এর বিচারক মিসেস সেলিনা আক্তার এই রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান বাবুল। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, উপজেলার ভিটিকালমিনা গ্রামের মজিবুরের ছেলে মো. জিহাদ হোসেন (১৯), হাফেজ হোসেনের ছেলে এমদাদ হোসেন (১৭) এবং মুরাদনগর উপজেলার ও দুলালপুরের ভাড়াটিয়া শাহ জালালের ছেলে মো. খাইরুল ইসলাম (১৭)।
এ রায় ঘোষণার সময় আসামি মো. খাইরুল ইসলাম উপস্থিত থাকলেও অপর দুই আসামি জিহাদ হোসেন (১৯), এমদাদ হোসেন (১৭) হাইকোর্ট থেকে জামিনে নিয়ে আসার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
নিহত জাহিদ হাসান উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের সাপলেজি গ্রামের ব্যবসায়ী মো. আক্তারুজ্জামানের ছেলে ও দুলালপুর চন্দ্রমনি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
এ বিষয়ে নিহতের বাবা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমার ছেলেকে তাঁরা নৃশংসভাবে মেরেছে। আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমি তাঁদের মৃত্যুদণ্ড আশা করেছিলাম।’
এর আগে ২০১৭ সালের গত ৪ নভেম্বর কুমিল্লার হোমনা উপজেলার সাপলেজী গ্রামের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন মো. জাহিদ হাসানকে বাড়ির পাশ থেকে কৌশলে অপহরণ করে তারই তিন বন্ধু। সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজির পর গত ৫ নভেম্বর হোমনা থানায় নিখোঁজের পরিবার একটি ডায়েরি করে। এরপর অপহরণকারীরা ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় নিহতের চাচা মাসুদ রানার মোবাইলে কল দিয়ে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। চাচা মাসুদ রানা জাহিদের পরিবারকে বিষয়টি জানালে তাঁরা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানান। এরপর মোবাইলের কল লিস্টের সূত্রধরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে জিহাদ হোসেন, এমদাদ ও খাইরুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাঁদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা মুক্তিপণ দাবি ও জাহিদ হাসানকে হত্যা করে স্কুলের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখে বলে তিন ঘাতক পুলিশকে জানায়। তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, দুলালপুর চন্দ্র মনি উচ্চ বিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে স্কুলছাত্র জাহিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।