কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণের চার দিন পর ফিরে এসেছেন আট তরুণ। অপহরণকারীদের নির্যাতনে অনেকেই আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) ভোরে অপহরণকারীদের বন্দিশালা থেকে ছাড়া পান তাঁরা।
অপহরণ থেকে মুক্তি পাওয়া যুবকেরা হলেন আবছার উদ্দিন (২২), নুরুল মোস্তাফা (৩৪), করিমুল্লাহ (২০), নুর মোহাম্মদ (২৪), মোহাম্মদ উল্লাহ (৩৮), সেলিম উল্লাহ (৩২) রিদুওয়ান (১৮) ও নুরুল হক (৫২)। বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন তাঁরা।
এর আগে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা এলাকার পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের ছড়ার খালে শখের বসে মাছ ধরতে গিয়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে অপহৃত হন তাঁরা। তাঁরা সবাই আত্মীয়। অপহৃতদের মধ্যে আবছার উদ্দীন কক্সবাজার কলেজের শিক্ষার্থী, কয়েকজন কৃষিজীবী এবং দুজন বিদেশে যাওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অপহরণের পর থেকে দফায় দফায় মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল অপহরণকারীরা। তখন থেকে পুলিশ একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে অভিযান পরিচালনা করেছিল। কিন্তু পুলিশ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হলেও চার দিন পর নিজেরা নিজেদের মতো করে ফিরেছেন।
এদিকে তাঁদের ফিরে আসা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অপহৃতদের পরিবার মুক্তিপণের বিষয়ে মুখ না খুললেও তাঁরা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরেছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
এর আগে পরিবারগুলো জানায়, অপহরণকারীরা ৩ লাখ টাকা মুক্তপণ দাবি করেছিল। সর্বশেষ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে বলে জানান অপহৃতের ভাই মো. আলী।
বাহারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে শত শত স্থানীয় লোক অপহৃতদের উদ্ধারে কাজ করেছিল। কিছু সময়ের ব্যবধানে তারা ফিরে আসে।’ অপহৃত পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘মুক্তিপণ ছাড়াই তারা ফিরেছে।’
টেকনাফ থানার আওতাধীন বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক বলেন, ‘পুলিশের অভিযানের কারণে অপহরণকারীরা ভয়ে তাঁদের ছেড়ে দেয়। তাঁরা কিছুটা আহত হয়। বর্তমানে তাঁরা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।’ মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়ে তাঁর কাছে কোনো তথ্য নেই বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনায় অপহৃত করিমুল্লাহর ভাই মোহাম্মদ হাবীব বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম।