রাজশাহীতে স্কুলশিক্ষিকা স্ত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। গত বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নগরীর রাজপাড়া থানার বুলনপুর ঘোষপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর ফাতেমা খাতুন (৩৭) নামের ওই নারীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। আগুনে ফাতেমার হাত, মুখ ও বুক পুড়ে গেছে।
ফাতেমা শহরের মহিষবাথান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
ঘটনার পর থেকে তাঁর স্বামী সাদিকুল ইসলাম পলাতক। সাদিকুলের বাবা সাজ্জাদ হোসেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর।
ফাতেমার ছোট বোন নূরজাহান খাতুন জানান, তাঁর বোনের এক ছেলে এবং এক মেয়ে। মেয়েটি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ছেলেটি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। সাদিকুল ইসলাম বেকার। মাঝে মাঝেই তিনি ফাতেমাকে নির্যাতন করতেন। দুই সন্তানের কথা ভেবে সব সহ্য করতেন ফাতেমা। বুধবার রাতে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই শরীরে কেরোসিন ঢেলে সাদিকুল ফাতেমার শরীরে আগুন লাগিয়ে দেন। পরে ফাতেমাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ বিষয়ে তাঁরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান নূরজাহান খাতুন।
রামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আফরোজা নাজনীন বলেন, বার্ন ইউনিটে কোনো শয্যা নেই। রোগীর চাপে ওয়ার্ডের সামনে বারান্দাতেও জায়গা নেই। ফাতেমাকে মেঝেতেই রাখা হয়েছে। তাঁর শরীরের ২৫ শতাংশ ‘মিক্সড বার্ন’ হয়েছে। এর মানে কোনো স্থানে গভীর ক্ষত হয়েছে, আবার কোনো স্থানের শুধু চামড়া পুড়েছে। তাঁর মুখমণ্ডল, হাত, বুক পুড়ে যাওয়া ছাড়াও শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শারীরিক অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।
কথা বলার জন্য সাদিকুল ইসলামের মোবাইলে কল দেওয়া হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। ঘটনার পর থেকেই ফাতেমা খাতুনের স্বামী সাদিকুল ইসলাম পলাতক। তাঁকে আটকের চেষ্টা চলছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।