অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ছোটবেলা থেকেই পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু এই স্বপ্ন পূরণে প্রয়োজন শুধু মেধা নয়—আর্থিক সামর্থ্য, সুযোগ এবং সঠিক দিকনির্দেশনা। ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ক্ষেত্রে যেমন সুযোগ তুলনামূলক বেশি, পাইলট হতে গেলে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও উচ্চ ব্যয়ের কারণে অনেক মেধাবীর স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকে। এই বাস্তবতা পরিবর্তনে উদ্যোগী হয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। দেশের অন্যতম শীর্ষ বেসরকারি এয়ারলাইনসটি মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে নিজস্ব অর্থায়নে পাইলট তৈরির উদ্যোগ নিয়ে তরুণদের স্বপ্ন পূরণের নতুন দরজা খুলে দিয়েছে।
২০১৪ সালের ১৭ জুলাই দুটি ড্যাশ-৮ কিউ-৪০০ নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলা আজ প্রায় ১২ বছরের যাত্রায় দেশের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি এয়ারলাইনসে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে তাদের বহরে রয়েছে তিনটি ৪৩৬ আসনের এয়ারবাস এ৩৩০-৩০০ ও ৯টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০সহ মোট ২৫টি এয়ারক্র্যাফট। শিগগির বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও কয়েকটি অত্যাধুনিক এয়ারক্র্যাফট। বিমানবহর বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে পাইলটের প্রয়োজনীয়তাও, যা স্বল্প সময়ে পূরণ করা কঠিন। তাই আগেই নিজেদের পাইলট হিসেবে প্রস্তুত করতে ২০২২ সাল থেকে স্টুডেন্ট পাইলট নিয়োগের পরিকল্পনা নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
নিয়োগের জন্য কঠোর বাছাই প্রক্রিয়ায় আইকিউ টেস্ট, ইংরেজি-গণিত-ফিজিকসে লিখিত পরীক্ষা, পাইলট অ্যাপটিটিউড টেস্ট, সাইকোমেট্রিক, মেডিকেল ও মৌখিক পরীক্ষার সমন্বয়ে বাছাই করা হয় যোগ্য তরুণদের। ইতিমধ্যে ২২ জন প্রশিক্ষণার্থী যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা এপিক ফ্লাইট একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে ইউএস-বাংলায় ফার্স্ট অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছেন। আরও পাঁচজন প্রশিক্ষণ শেষের পথে, সাতজন অপেক্ষমাণ। প্রশিক্ষণ শেষে সবাই ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (CPL) অর্জন করেছেন।
নতুন ব্যাচের জন্য আবেদনপ্রক্রিয়া এখন চলমান। আবেদন করতে হলে এসএসসি ও এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫সহ গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানে উচ্চ ফল থাকতে হবে। ইংরেজিতে ন্যূনতম জিপিএ-৪ প্রয়োজন। ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেলের শিক্ষার্থীদেরও নির্দিষ্ট গ্রেডের শর্ত রয়েছে। তবে জিইডি গ্রহণযোগ্য নয় এবং ইংরেজিতে দক্ষতা বাধ্যতামূলক। বয়স হতে হবে ১৭ থেকে ২২ বছর, পুরুষদের উচ্চতা ন্যূনতম ১৬৮ সেমি এবং নারীদের ১৬৪ সেমি। দৃষ্টিশক্তি ৬/৬ হতে হবে, বিএমআই অনুযায়ী ওজন, অবিবাহিত, অধূমপায়ী ও নন-অ্যালকোহলিক হতে হবে। এ ছাড়া কোনো অপরাধমূলক সম্পৃক্ততা থাকলে আবেদন বাতিল হবে। সিভিল এভিয়েশন অথরিটি থেকে ক্লাস-১ মেডিকেল সার্টিফিকেট নিতে হবে।
সব পরীক্ষা ও যোগ্যতা যাচাইয়ে উত্তীর্ণদের ইউএস-বাংলার ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের যেকোনো দেশে পাঠানো হবে ফ্লাইট ট্রেনিংয়ের জন্য। প্রশিক্ষণ শেষে উত্তীর্ণ ক্যাডেটরা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ফার্স্ট অফিসার হিসেবে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
আবেদনের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০২৫। আগ্রহীরা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ওয়েবসাইটে (usbair.com/career/student-pilot) গিয়ে আবেদন করতে পারবেন।