ঢাকা: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা সদ্যসমাপ্ত এপ্রিল মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। গত মাসে তাঁরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২০৬ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের (জুলাই- এপ্রিল) প্রথম ১০ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ৬৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬০০ কোটি ডলার বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৪৮৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
আর গত বছর (২০২০ সাল) এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ৬০ হাজার। এই হিসাবে গত বছরের এপ্রিলের সময়ের তুলনায় এই বছরের এপ্রিলে প্রায় ৯৭ কোটি ডলার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমান বলেন, পবিত্র রমজানের ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা ব্যাংকিং ব্যবস্থায় রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রবাসীরা গত বছরের এপ্রিল মাসের তুলনায় এই বছরের এপ্রিলে ৩৯ শতাংশ রেমিট্যান্স বেশি পাঠিয়েছেন। সামনে ঈদ-উল-ফিতর। ঈদ উপলক্ষে মাসের বাকি দিনগুলোতেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে।
এর আগে, করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে গত বছরের জুলাই মাসে প্রবাসীরা প্রায় ২৬০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। যা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।
এদিকে ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার কারণে উন্নত দেশ থেকে রেমিট্যান্স আসা বেড়েছে। এছাড়া বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছেন, এমন অনেক দেশ এখনও লকডাউন হয়নি। আবার লকডাউন হলেও পরিবার চালাতে ঋণ করে হলেও অনেকে টাকা পাঠাচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের মার্চে মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯১ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ১৭৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে।
সব মিলে চলতি অর্থবছরের (জুলাই- এপ্রিল) প্রথম ১০ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ৬৭ কোটি ২০ লাখ ডলার।
গত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৪৮৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অবশ্য গত অর্থবছরের পুরো সময়ে এসেছিল এক হাজার ৮২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনও প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী। এছাড়া ঈদ ও উৎসবে বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি এক শতাংশ দেওয়ার অফার দিচ্ছে। ফলে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহী হচ্ছেন প্রবাসীরা।