তীব্র দর-কষাকষির পর যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ ওষুধ তৈরি প্রতিষ্ঠান ফাইজার প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার মূল্যে বায়োটেক স্টার্টআপ মেটসেরা অধিগ্রহণের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। স্থূলতা চিকিৎসায় বিশেষায়িত মেটসেরা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও ডেনমার্কের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি নভো নরডিস্কের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র দর-কষাকষি চলছিল। অবশেষে গতকাল শনিবার নভো নরডিস্ক প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়। নভো নরডিস্ক বর্তমানে ওজন কমানোর জনপ্রিয় ওষুধ উইগোভি এবং ডায়াবেটিসের ওষুধ ওজেম্পিক তৈরি করে।
গত শুক্রবার মেটসেরা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ফাইজার শেয়ারপ্রতি ৮৬ দশমিক ২৫ ডলার পর্যন্ত মূল্যে অধিগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে, যা মোট প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের সমান। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ জানিয়েছে, তারা সর্বসম্মতিক্রমে ফাইজারের প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করেছে এবং আশা করছে, ১৩ নভেম্বরের শেয়ারহোল্ডার সভা শেষে চুক্তিটি দ্রুত সম্পন্ন হবে।
ফাইজারের সর্বশেষ প্রস্তাব সেপ্টেম্বরে করা তাদের প্রাথমিক প্রস্তাবের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। সেই প্রস্তাবের পরই নভো নরডিস্ক পাল্টা প্রস্তাব দেয়, যা দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একধরনের ‘দর যুদ্ধ’ সৃষ্টি করে।
তবে শনিবার নভো নরডিস্ক জানায়, তারা মেটসেরার জন্য আর নতুন কোনো প্রস্তাব দেবে না। কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে বলে, তারা তাদের কৌশলগত লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অন্য ব্যবসায়িক অধিগ্রহণের সুযোগগুলো খুঁজবে।
এদিকে নভো নরডিস্কের প্রস্তাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মেটসেরা জানায়, এফটিসি কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য প্রতিযোগিতাবিরোধী (অ্যান্টিট্রাস্ট) আইনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। ফলে পরিচালনা পর্ষদ মনে করে, নভো নরডিস্কের প্রস্তাব ‘অগ্রহণযোগ্যভাবে বেশি আইনি ও নিয়ন্ত্রক ঝুঁকি’ তৈরি করছে, যেখানে ফাইজারের প্রস্তাবে সেই ঝুঁকি অনেক কম।
তবে নভো নরডিস্ক দাবি করেছে, তাদের প্রস্তাব সম্পূর্ণভাবে অ্যান্টিট্রাস্ট আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে এক বিলিয়নের বেশি মানুষ স্থূলতায় ভুগছিল এবং ৮০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিল।
চুক্তিটি সম্পন্ন হলে স্থূলতা চিকিৎসা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের বৈশ্বিক বাজারে ফাইজার নতুন এক শক্তিশালী অবস্থান পাবে; যেখানে এরই মধ্যে নভো নরডিস্ক আধিপত্য বিস্তার করছে।