হোম > অর্থনীতি

কাজের সংকট, বৈষম্য বাড়ার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও বড় উদ্বেগ রয়ে গেছে কর্মসংস্থান সংকোচন এবং দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধিতে; মূল্যস্ফীতির স্তর এখনো উচ্চপর্যায়ে রয়ে গেছে। এতে দীর্ঘ মেয়াদে বৈষম্য বাড়ার আশঙ্কা আছে। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক জানাল এমন তথ্য। সংস্থাটির ‘বাংলাদেশ আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদন বলছে, তাদের অনুমান অনুযায়ী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেশের জিডিপি বেড়ে হতে পারে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ আর পরের অর্থবছরে তা বেড়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ নাজমুস সাদাত খান প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।

এর আগে গত সপ্তাহে এডিবি চলতি অর্থবছরের জন্য ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস জানিয়েছিল। তবে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, যদিও জিডিপি প্রবৃদ্ধির দিক দিয়ে উন্নতির সম্ভাবনা দেখা গেছে, তবু দারিদ্র্য ও কর্মসংস্থান-সংক্রান্ত সূচকে উদ্বেগের কারণ আছে। সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, জাতীয় দারিদ্র্যের হার ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়ে ২১ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। একই সময়ে কর্মসংস্থান-জনসংখ্যা অনুপাতও ২ দশমিক ১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশে, আর বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোয় মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও তা এখনো বেশ উচ্চপর্যায়ে রয়ে গেছে; আগস্টে এটি ছিল ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিনিয়োগ স্থবিরতা, কর্মসংস্থান ঘাটতি, দুর্বল ব্যাংক খাত, খেলাপি ঋণ ও রাজস্ব আদায়ে দুর্বলতা বাংলাদেশে এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ উদ্বেগ কর্মসংস্থান সংকটে। সংস্থাটির মতে, তরুণ ও নারীদের জন্য উৎপাদনমুখী খাতে কাজ না বাড়ালে সামাজিক বৈষম্য বাড়বে ও প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে না। বর্তমানে ৩০ লাখ কর্মক্ষম মানুষ শ্রমবাজারের বাইরে রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ২৪ লাখ নারী।

ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রথম প্রান্তিকে বড় ধাক্কার কারণে পুরো ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি সামান্য কমে ৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশে নেমে এসেছিল। পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে বিনিয়োগ স্থবিরতা, উচ্চ সুদের হার ও উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে গেছে এবং মূলধনি পণ্যের আমদানি কমেছে; ফলে নতুন প্রকল্প ও মূলধনি ব্যয় স্থগিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিডিপি বাড়লেও কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। শিল্প ও সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি থাকলেও নতুন চাকরি তৈরি না হয়ে বরং গড়ে ২ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে, যার মধ্যে সেবা খাতেই পতন সবচেয়ে বেশি। কৃষিক্ষেত্রে কিছুটা উন্নতি হলেও তা সামগ্রিক ঘাটতি পুষিয়ে দিতে পারেনি। তৈরি পোশাক খাত রপ্তানি আয়ে বড় ভূমিকা রাখলেও কর্মসংস্থানের সংকট দূর করতে তা যথেষ্ট নয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নীতিমালা সামঞ্জস্য করার পর ২০২৫ সালের মার্চে ব্যাংক খাতে অকার্যকর ঋণ (এনপিএল) বেড়ে ২৪ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার গড় ৭ দশমিক ৯ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি। একই সঙ্গে মূলধন-ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ অনুপাত (সিআরএআর) নেমে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ন্যূনতম ১০ শতাংশের মানদণ্ডের নিচে। প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, শিথিলতা নীতিমালা প্রত্যাহার হলে এনপিএল আরও বাড়তে পারে।

রাজস্বসংক্রান্ত চিত্রে প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজস্ব সংকট মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকার করনীতি ও প্রশাসনের বিভাজন, কর ব্যয়ের ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন এবং ব্যক্তিগত করদাতাদের জন্য অনলাইন কর দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে। তবুও রাজস্ব ঘাটতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৩ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৪-২৫ সালে আনুমানিক ৪ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের বিভাগীয় পরিচালক জ্যঁ পেম বলেন, টেকসই প্রবৃদ্ধি ও ভালো কর্মসংস্থানের জন্য সাহসী সংস্কার ও দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি, বিশেষ করে রাজস্ব আয় বাড়ানো, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা দূর করা, জ্বালানি ভর্তুকি কমানো, নগরায়ণ পরিকল্পনা শক্ত করা এবং বিনিয়োগ পরিবেশে দ্রুত উন্নতি আনা।

যশোরের খেজুর রস: লক্ষ্য ১২০ কোটি টাকার গুড় উৎপাদন

ইসলামি ১০ ও সরকারি ৬ ব্যাংক: ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি

ছয় মাসে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

এনবিআর কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে টাকা দাবি, সতর্কবার্তা

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল আরও ৫৭ হাজার টন গম

চট্টগ্রামে ওয়ালটন পণ্যের ক্রেতাদের হাতে উপহার হস্তান্তর

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ল আরও এক মাস

তুলা গবেষণা কেন্দ্রের ফুটি কার্পাসে নতুন সম্ভাবনা

১ জানুয়ারি কার্যকর: দেশের সব স্থলবন্দরের মাশুল বাড়ল ৫ শতাংশ

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর: ফসল ব্যবস্থাপনায় উত্তরের চার জেলায় কৃষির নতুন প্রকল্প